কক্সবাংলা ডটকম(৮ অক্টোবর) :: দেশের মানুষের পুষ্টি ও খাদ্য চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ডিমের প্রয়োজন ১ হাজার ৭৩২ কোটি ৬৪ লাখ পিস। তবে গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে উৎপাদন ছাড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩৬ কোটি ৪৩ লাখ পিস। গত অর্থবছরে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ছাড়িয়েছে ৩ কোটি ৭৯ লাখ। ফলে প্রথমবারের মতো ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একটি সময়ের আমদানিনির্ভর পণ্যটি এখন দেশেই উৎপাদন হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র জানায়, সুস্থভাবে জীবন ধারণের জন্য একজন মানুষের বছরে ন্যূনতম প্রায় ১০৪টি ডিমের প্রয়োজন। উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে জনপ্রতি ডিমের প্রাপ্যতা বাড়ছে। ২০০১ সালে জনপ্রতি প্রাপ্যতা ৩৪টি হলেও গত বছরে তা ১০৪টিতে উন্নীত হয়।
সাধারণ মানুষের মাঝে ডিম খাওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে বাড়লেও তা এখনো সন্তোষজনক নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একজন মানুষ বছরে ২০০টির অধিক ডিম গ্রহণ করে। এক দশক আগেও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ডিমের উৎপাদন ছিল প্রায় ৪৬৯ কোটি ৬১ লাখ পিস।
২০১৯-২০ অর্থবছরে তা উন্নীত হয়েছে ১ হাজার ৭৩৬ কোটি পিসে। এক দশকের ব্যবধানে ডিমের উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৭০ শতাংশ। প্রতি বছর গড়ে বাড়ছে ১১৫ কোটি ১২ লাখ পিস। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
উৎপাদনের এ স্বস্তির মধ্যেই আজ পালিত হচ্ছে ২৫তম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন, সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে দিবসটি বিশ্বজুড়ে একযোগে পালিত হয়ে আসছে।
দেশে দিবসটি যৌথভাবে উদযাপন করবে মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস), বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা-বিবি)। বাংলাদেশে এ বছরের ডিম দিবসের স্লোগান হচ্ছে ‘প্রতিদিন ডিম খাই, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াই’।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, গত এক দশকের ব্যবধানে ডিমের উৎপাদনে সফলতা দেখিয়েছেন দেশের খামারিরা। উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল।
দেশে ডিমের স্বয়ংসম্পূর্ণতায় খামারি থেকে শুরু করে এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে হবে। অবহেলিত খাতটি টেকসই করতে হলে আরো সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। ডিম উৎপাদনে খামারিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিপণন কৌশল ও বাজারের সঙ্গে তাদের সংযোগ বাড়াতে হবে।
ডিএলএসের প্রাণিসম্পদ অর্থনীতি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ডিমের উৎপাদন ছিল ৫৭৪ কোটি ২৪ লাখ, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৬০৭ কোটি ৮৫ লাখ, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭৩০ কোটি ৩৮ লাখ, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৭৬১ কোটি ৭৪ লাখ পিস।
তবে প্রথমবারের মতো হাজার কোটি পিসের উৎপাদন ছাড়ায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে।
তখন ১ হাজার ১৬ কোটি ৮০ লাখ হলেও পরের অর্থবছরে তা ছিল ১ হাজার ৯৯ কোটি ৫২ লাখ পিস। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ১৯১ কোটি ৩১ লাখ পিস, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ৩১ লাখ পিস, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৫৫২ কোটি পিস এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭১১ কোটি পিস।
Posted ২:২৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৯ অক্টোবর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy