কক্সবাংলা ডটকম(১৭ জুন) :: দীর্ঘ দু দশকেরও প্রতীক্ষার শেষ৷ অবশেষে বদলেই গেল ম্যাসিডোনিয়ার নাম৷ বিশ্বকাপের আসর চলছে৷ তারই মাঝে বিশ্বমানচিত্রে নতুন নাম উত্তর ম্যাসিডোনিয়া (রিপাবলিক অফ নর্দান ম্যাসিডোনিয়া) নামেই পরিচিত হবে এই রাষ্ট্র৷ প্রাচীন ম্যাসিডোনিয়া থেকেই জন্ম বিশ্ববিখ্যাত বীর আলেকজান্ডারের৷ এখান থেকেই তিনি বিশ্বজয় করেছিলেন৷
বিতর্কের কারণ গ্রিসেরই একটি অংশ ম্যাসিডোনিয়া নামে পরিচিত৷ সেখানকার বাসিন্দারা নিজেদের ম্যাসিডোনিয়ান হিসেবেই পরিচয় দেন৷ আবার তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নামও ম্যাসিডোনিয়া৷ ফলে নাগরিকত্বের পরিচয় নিয়ে বিতর্ক লেগেই ছিল৷ এর জেরেই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বিতর্ক চলেছে৷ রবিবার সব বিতর্কের অবসান ঘটাতে গ্রিস ও ম্যাসিডোনিয়ার প্রতিনিধিরা দুই দেশের সীমান্তে একটি ছোট্ট গ্রামে বৈঠক করেন৷ সেখানেই নাম পরিবর্তনের বিষয়ে চূড়ান্ত শিলমোহর পড়ে গিয়েছে৷
বিবিসি ও এএফপি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট, দু দশকেরও বেশি সময় আগে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল ম্যাসিডোনিয়া৷ তারপর থেকেই নাম নিয়ে প্রতিবেশী গ্রিসের সঙ্গে বিরোধিতা চলছিল৷ সমস্যা সমাধানে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা উদ্যোগী হন৷ এই ইস্যুতে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর আলেক্স সিপারাসকে আইনসভায় আস্থা ভোটের পথ নিতে হয়৷
কারণ গ্রিসের বিরোধী দল নিউ ডেমোক্রেসি এর বিরোধিতা করে৷ শনিবার বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয় রাজধানী এথেন্সে৷ অবশেষে আস্থাভোটে ১৫৩ টি ভোটের মধ্যে ১২৭টি পেয়ে জয়ী সহ সরকারপক্ষ৷ তারপরেই নাম পরিবর্তনের চুক্তি সম্পাদন করার পথে সবুজ সংকেত দেয় গ্রিস সরকার৷
ম্যাসিডোনিয়ার সংবিধান বলছে, নতুন নাম কার্যকর করতে হলে গণভোটের পথেই যেতে হবে সেদেশের সরকারকে৷ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট, ইতিমধ্যেই সেদেশে শুরু হয়েছে আনন্দ৷
জানা যায়,গ্রিসের উত্তরের দেশ মেসিডোনিয়া, যা সাবেক যুগোশ্লাভিয়া নামে পরিচিত। দেশটির বিপক্ষে মেসিডোনিয়া নাম ব্যবহারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। গ্রিসের একটি প্রদেশের নামও মেসিডোনিয়া।
তিন দশক ধরে আলোচনার পর এই চুক্তি সই করলো দেশ দু’টি। চুক্তিতে নর্থ মেসিডোনিয়া নাম রাখার পাশাপাশি জাতীয়তা, ভাষা, সীমান্ত, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ থাকছে।
১৯৯১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মেসিডোনিয়ার সঙ্গে গ্রিসের নাম নিয়ে বিবাদ চলছিল। দীর্ঘ ২৭ বছরের বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ১৩ জুন ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছায় দেশ দুটি।
যখন যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায় তখন একটি অংশ নিজেদের নাম রাখে মেসিডোনিয়া। কিন্তু এর দক্ষিণের প্রতিবেশী দেশ গ্রিস তাতে আপত্তি জানায়। কারণ, গ্রিসেও মেসিডোনিয়া নামের একটি অঞ্চল রয়েছে। দুটি দেশের পক্ষ থেকেই মেসিডোনিয়া নামটি তাদের বলে দাবি করা হয়।
গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের নাম মেসিডোনিয়া। আবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর নামও মেসিডোনিয়া। গ্রিকদের দাবি, মেসিডোনিয়া নামটি শুধুই তাদের। এ নামে অন্য কোনো দেশ হতে পারে না।
এর আগে নাম নিয়ে বিবাদের জেরে মেসিডোনিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ভেটো দিয়ে আসছিলো গ্রিস।
Posted ৮:১৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ জুন ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy