কক্সবাংলা ডটকম(১২ নভেম্বর) :: মিসরে শুরু হওয়া কপ২৭ জলবায়ু সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এ পৃথিবীর অস্তিত্বের হুমকি সৃষ্টি করছে। তবে এ ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। খবর রয়টার্স।
ইউরোপে যুদ্ধ থেকে শুরু করে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, এসব সামলানোর পাশাপাশি বর্তমানে জলবায়ু সংকটের দিকে নজর দেয়া হচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক মনোযোগও সরে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এড়াতে বৈশ্বিক যে প্রত্যাশা সেটাকে আরেকটু উৎসাহী করতেই এ বক্তব্য দেন বাইডেন।
শার্ম এল-শেখ শহরে সমুদ্রতীরবর্তী এক রিসোর্টে আয়োজিত জাতিসংঘের সম্মেলনে জো বাইডেন বলেন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, পরিবেশগত নিরাপত্তা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং এ পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণের জন্য জলবায়ু সংকট নিরসন জরুরি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি এখানে দাঁড়াতে পারি এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা আমরা অর্জন করব।
সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তেল ও গ্যাস শিল্পের নিঃসরণ করা সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রিনহাউজ গ্যাস মিথেন কমিয়ে আনার অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। জাপান, কানাডা, নরওয়ে, সিঙ্গাপুর ও ব্রিটেনের মতো ওয়াশিংটন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও একটি যৌথ ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে তেল শিল্প থেকে মিথেন নিঃসরণ কমাতে আরো বেশি পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়। এ ঘোষণার ভিত্তিতে গত বছর একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি করা হয়, যেখানে এক দশকের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৩০টি দেশ স্বাক্ষর করে।
বাইডেন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন নিঃসরণ ৩০ শতাংশ কমানোই হবে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আটকে রাখার সবচেয়ে ভালো পথ। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমিত রাখাই ছিল ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির মূল লক্ষ্য বলেও পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
বৈশ্বিক যেসব সংকট যেমন ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর মতো ঘটনা জলবায়ু প্রত্যাশা কমিয়ে আনার অজুহাত হতে পারে না উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, যেকোনো সময়ের চেয়ে বিষয়টা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেন আমরা আমাদের জলবায়ু প্রতিশ্রুতি দ্বিগুণ করি। রাশিয়ার যুদ্ধ শুধু জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকেই সরে আসার ক্ষেত্রে অনেক বেশি তাড়া তৈরি করেছে।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক নিঃসরণ ২০১০ সালের মাত্রা থেকে ২০৩০ সালে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধির পথে রয়েছে। সেই সঙ্গে ধ্বংসাত্মক সব ঝড়, খরা, দাবানল ও বন্যার কারণে বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ৫ সেলসিয়াসে আটকে রাখতে হলে নিঃসরণ কমাতে হবে ৪৩ শতাংশ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কিছু দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে চালানো রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে বেড়ে যাওয়া ভোক্তাপর্যায়ে জ্বালানির দাম কমাতে স্বল্পমেয়াদে জীবাশ্ম জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, তেল ও গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির প্রতি ওয়াশিংটনের আহ্বান দীর্ঘমেয়াদে শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না।
Posted ২:১০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Chy