কক্সবাংলা ডটকম(৩ জানুয়ারী) :: সাত সকালেই মার্কিন এয়ারস্ট্রাইক। আর তারপর থেকেই তোলপাড় গোটা বিশ্বের রাজনীতি থেকে অর্থনীতি। বাড়ছে তেলের দাম, পড়ছে টাকার দাম, কেউ কেউ বলছেন যুদ্ধের ইঙ্গিত। কারণ এই এয়ারস্ট্রাইকে মৃত্যু হয়েছে কাশিম সোলেমানির। মধ্যপ্রাচ্যে সব কূটনীতির খেল নাকি খেলতেন ইনিই, বলে দাবি একাধিক সংবাদমাধ্যমের। আদতে তিনি ইরানের সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষ সেনা অফিসার।
তবে ইরানের প্রেসিডেন্টের কাছের লোক ছিলেন এই সোলেমানি। আরও ভালোভাবে বলতে গেলে, খাতা-কলমের পিছনে তিনিই ছিলেন ইরানের সর্বেসর্বা, বলেও দাবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের। তাঁর মৃত্যু বড় ক্ষতি হিসাবেই দেখছে তেহরান।
এদিনের এই ঘটনায় অনেকেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন। বিশেষ করে সামরিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মার্কিন এই উস্কানির প্রতিশোধ নেবে ইরান। আর এর ফলে ভয়ঙ্কর হতে পারে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
পেন্টাগন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই সুলেইমানিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
ইরানি মিলিশিয়াদের ঘাঁটিতে বিমান হামলার জেরে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে আক্রমণ করে ইরানপন্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেষমেষ সাড়ে ৭০০ সেনা ডেকে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
এর দু্ই দিনেনের মাথায় বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাতে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ইরানি কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাশেম সুলেইমানির গাড়িবহরে রকেট ছোড়ে মার্কিন বাহিনী। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সুলেইমানি শিয়া পিএমএফ নেতা আবু মাহদি আল মোহানদিসহ ৮ জন।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর বলছে, ইরাকে মার্কিন দূতাবাসের কর্মী ও কূটনীতিকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।
ইরানের আঞ্চলিক শক্তি বৃদ্ধির কারিগর জেনারেল সুলাইমানি, দীর্ঘদিন ধরেই ছিলেন সিআইএ এবং মোশাদের হিটলিস্টে। ১৯৯৮ সাল থেকে ইরানের কুদস ফোর্সের নেতৃত্বে। দুই দশকে এ বাহিনীর কর্মতৎপরতা ছড়িয়ে পড়ে ইরানের বাইরে। সিরিয়া আসাদ বাহিনীকে সমর্থন এবং আইএস বিরোধী লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে এ বাহিনীর।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধ নিয়ে ক্ষুদ্ধ ইরাকিরা। তাদের বক্তব্য, আমেরিকা এবং ইরানের উচিত ইরাকের বাইরে নিয়ে তাদের সমস্যা সমাধান করা। ইরাকের ভেতরে বসে এসব তৎপরতা চলতে দেয়া হবে না।
টুইটে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ জানান, সুলাইমানিকে কাণ্ডজ্ঞানহীন হামলার মাধ্যমে হত্যার পরিণতির দায় যুক্তরাষ্ট্রকে নিতে হবে।
চরম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি। বলেন, যেসব অপরাধী তাদের নোংরা হাত দিয়ে জেনারেল সুলাইমানির রক্ত ঝরিয়েছে তাদের জন্য কঠোর প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুলেইমানির হত্যা ইস্যুতে বড় ধরনের সংঘাতে জড়াতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান।
ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অব ডেমোক্রেটসের সিনিয়র ফেলো বেহনাম বেন তালেবলু বলেন, পারস্য উপসাগর, হরমুজ প্রণালী, ড্রোন হামলা নিয়ে গেলো সাড়ে ৬ মাস ধরেই মুখোমুখি অবস্থানে ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রথমবার অনেকটা যুদ্ধাবস্থায় উপনীত হয়েছে দেশ দুটি।
সুলাইমানির শিয়া প্রভাব যুক্ত লেবানিজ হিযবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদ ছাড়াও পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ইয়েমেনের হুথিরা।
Posted ৯:১৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy