কক্সবাংলা ডটকম :: মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্বাহী আদেশে ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মিয়ানমারের দীর্ঘ ৪৯ বছরের স্বৈর শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গেল বছর নভেম্বরে। নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি)। তবে নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটায় দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় সু চিসহ ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ নেতাদের।
নতুন সরকারের প্রথম অধিবেশন বসার আগে আগে ঘটে যাওয়া এই অভ্যুত্থানের দিনই এর নিন্দা জানিয়ে সু চিসহ নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। গত মঙ্গলবার উচ্চ পর্যায়ের সবধরনের সম্পর্ক স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এবার সেই পথে হেঁটে যুক্তরাষ্ট্রও দেশটি সেনাকর্মকর্তাদের উপর স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাইডেন এই প্রথম নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ প্রয়োগ করলেন।
বিবিসির জানিয়েছে, বাইডেন ঘোষিত এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সামরিক কর্মকর্তা, তাদের পরিবারের সদস্য ও সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মিয়ানমার সরকারের এক বিলিয়ন ডলারের সরকারি তহবিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যাতে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমরা কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রে মিয়ানমার সরকারের সম্পদ জব্দ করতে যাচ্ছি। তবে স্বাস্থ্যসেবা, সুশীল সমাজসহ যেসব ক্ষেত্রের সঙ্গে মিয়ানমারের জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার বিষয় জড়িত রয়েছে, সেগুলোর প্রতি আমরা সমর্থন জানাব।’ প্রয়োজনে মিয়ানমারের সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বাইডেন।
মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনর্বহালের আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ বেসামরিক রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন। বাইডেন বলেন, মিয়ানমারের জনগণ প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাদের এ প্রতিবাদ পুরো বিশ্ব দেখছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থগিত করল নিউজিল্যান্ড
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে দেশটির সঙ্গে সবধরনের উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ স্থগিত করেছে নিউজিল্যান্ড। সেই সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিউজিল্যান্ডে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারিরও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স
আজ মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন নিজে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দৃঢ় বার্তা হল, এখান থেকে আমরা যা কিছু করতে পারি করবো এবং একটা জিনিস আমরা করছি সেটা হল উচ্চ পর্যায়ের সবধরনের আলোচনা এবং আমরা নিশ্চিত করবো যেন আমাদের পক্ষ থেকে পাঠানো কোন ধরনের সহায়তা কর্মসূচি সামরিক শাসনকে সমর্থন না করে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ৩ কোটি ডলার সহায়তা পাঠিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
এদিকে, নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নানাইয়া মাহুতা পৃথক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের বৈধতা স্বীকার করে না। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে আটক সব রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে অবিলম্বে দেশটিতে বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
Posted ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Chy