বিশেষ প্রতিবেদক(১০ জানুয়ারি) :: সারা দেশে একযোগে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের বছর “মুজিব বর্ষ ২০২০ এর “ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজারেও নানা আয়োজনে উদযাপন করা হয় ক্ষণগণনার এ্ই বিশেষ মুহুর্তটি।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী মুজিবর্ষের ক্ষণগণনার দিন শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার সৈকত হয়ে উঠে লোকে লোকারণ্য। ঐতিহাসিক এ দিনকে কক্সবাজারবাসী স্মরণীয় করে রাখতে নানাভাবে, নানা সাজে, নানা রঙে, বর্ণিলভাবে হাজির হয় সমুদ্র সৈকতে। এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সৈকতে অর্ধ লক্ষাধিক লোকের ঢল নামে।
শুক্রবার দুপুর ২টা থেকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দলে দলে হাজির হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, পেশাজীবী সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা তাদের নিজ নিজ ব্যানার নিয়ে। ব্যক্তিগতভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকে।
অনুষ্ঠানে পর্যটকসহ অনেক বিদেশিও অংশ নিয়েছেন। আবাল বৃদ্ধ, শিশু কিশোর, জাতিধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের উপস্থিতিতে সরব হয়ে উঠে সৈকতের বালিয়াড়ি।
বিকাল ৪টায় ক্ষণগণনার অনুষ্ঠানস্থলে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ সমবেত হয়। বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে ঢাকার জাতীয় প্যারেড ময়দানের অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার প্রচার করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে জাতির জনকের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী বিমান অবতরণ করে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে।
ওই অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয় ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সেই ঐতিহাসিক দৃশ্য। ৪টা ৪৫ মিনিটে বিমান থেকে আলোক প্রক্ষেপণ ও তোপধ্বনি করা হয়।
আলোক প্রক্ষেপণের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বিমান থেকে নেমে আসে আর লাল গালিচায় ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করা হয়। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা উদ্বোধন ও লোগো উন্মোচন করেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের এমন প্রতিকী দৃশ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে অর্ধ লক্ষাধিক জনতা দাঁড়িয়ে হর্ষধ্বনি আর স্লোগানে প্রকম্পিত করে তোলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। সবার মুখে মুখে ‘জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। এ সময় এমন দৃশ্য দেখে অনেকের চোখে দেখা যায় আনন্দাশ্রু।
মুজিববর্ষের ক্ষণগণনাকে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সঙ্গে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হলো কক্সবাজার। আর এই জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন ব্যাপক ও বর্ণাঢ্য আয়োজন করে। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষি হয়েছেন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী, রাজনীতিক, পেশাজীবী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ।
ঢাকার প্যারেড গ্রাউন্ডের সরাসরি অনুষ্ঠান শেষে কক্সবাজার সৈকত অনুষ্ঠানের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন অতিথিদের নিয়ে সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে উঠে আসেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি কানিজ ফাতেমা আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. শিরীন আখতার, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক এমপি মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান নুরুল আবছার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল।
অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ ১০০ ছবির প্রদর্শনী, ১০০টি বেলুন, ১০০টি শান্তির পায়রা উড়ানো ও ১০০ টি ফানুস উড়ানো হয়। এরপরই পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে কক্সবাজারের ইতিহাস, ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি ছিল রাখাইন নৃত্য।
অনুষ্ঠানে ব্যানার সহকারে দলে দলে জেলা আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন, জেলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, দরিয়ানগর সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঝিনুকমালা খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটে সেজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলাপুলিশ, ট্রাফিক, র্যাব, আনসার বাহিনীর সদস্য/সদস্যা এবং স্বেচ্ছাসেবক ও স্কাউট দলের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর (মুজিববর্ষ) ক্ষণগণনা কর্মসূচীতে আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের একান্ত কাম্য
Posted by DC Cox's Bazar on Wednesday, January 8, 2020
Posted ১২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy