কক্সবাংলা ডটকম(২১ ডিসেম্বর) :: মার্কিন মহাকাশ বাহিনীর আনুষ্ঠানিক যাত্রা নিশ্চিত হয়েছে। ‘২০২০ ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট’ শীর্ষক আইনে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। একই সঙ্গে নতুন বাহিনীর অর্থায়নও নিশ্চিত করা হয়েছে।
মহাকাশ বাহিনী গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশটি মহাশূন্যে চীন ও রাশিয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়টি নিশ্চিত করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীতে ষষ্ঠ শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে মহাকাশ বাহিনী, যা দেশটির বিমানবাহিনীর অধীনে পরিচালিত হবে। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে বাহিনীর জন্য বরাদ্দ থাকছে চার কোটি ডলার। তবে প্রতিবছর এ বাহিনী অন্যান্য পাঁচটি বাহিনীর মতোই একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের সামরিক বরাদ্দ পাবে। গত শুক্রবার ট্রাম্প সামরিক বাহিনীর জন্য ৭৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের বাজেটে সই করেছেন।
মহাকাশ বাহিনী গঠনের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো আরো জানায়, মার্কিন সামরিক বাহিনীর মহাকাশবিষয়ক কার্যক্রম দেখভালের জন্য গত আগস্টে প্রতিষ্ঠা করা হয় স্পেস কমান্ড (স্পেসকম) শীর্ষক বাহিনী। বিদ্যমান এ বাহিনীর কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করেই যাত্রা শুরু করছে মহাকাশ বাহিনী। বিমানবাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি বেসামরিক ব্যক্তিদের নিয়ে চলবে তাদের কাজ। সব মিলিয়ে থাকছে ১৬ হাজার সদস্য। মহাকাশ বাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বিমানবাহিনীর জেনারেল জে রেমন্ডকে। তিনিই বর্তমানে স্পেসকমের দায়িত্বে আছেন।
মহাকাশ বাহিনী গঠনের আইনে স্বাক্ষর প্রদান উপলক্ষে হাজির সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘মহাকাশে অনেক কিছুই ঘটতে যাচ্ছে, কারণ মহাকাশ হচ্ছে বিশ্বের নতুন যুদ্ধক্ষেত্র।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি ভয়ানক হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে মহাকাশে আমেরিকার সর্বাধিপত্য অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা নেতৃত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা অনেক ক্ষেত্রেই নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছি। এ মহাকাশ বাহিনী ওই উচ্চ স্থানে আগ্রাসন ঠেকাতে এবং সেখানে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে আমাদের সহায়তা করবে।’
মহাকাশ বাহিনীর সদস্যদের মহাকাশে বসে কাজ করতে হবে, তা কিন্তু নয়। এ বাহিনীর কাজ হবে মহাকাশে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সম্পদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে শত শত মার্কিন স্যাটেলাইট, যা যোগাযোগ ও নজরদারির কাজে ব্যবহার করা হয়।
মার্কিন মহাকাশ বাহিনীর গঠনের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে এ বছরের শুরুতেই তাগিদ দিয়েছিল প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। সে সময় তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নজরদারির জন্য মহাকাশ কার্যক্রমে ‘বলিষ্ঠ’ হয়ে উঠেছে চীন ও রাশিয়া। কিন্তু মহাকাশে কোনোভাবেই অন্য কারো শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। সে কারণেই মহাকাশ বাহিনী গঠনে আর দেরি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।
Posted ১২:৩২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Chy