কামাল শিশির,রামু(২২ জুলাই) :: গ্রামাঞ্চলে ধান,চাল সংরক্ষণে বাঁশের তৈরি বড় পাত্রের নাম গোলা। বাঁশ দিয়ে এ গোলা তৈরি করা হয়। গ্রামের গৃহস্থা পরিবারগুলো পুরো বছরের খাদ্যেও সংস্থানে গোলার ধান সংরক্ষণ করে থাকে। প্রতিধানের মৌসুমে ধান মারাকাটি করে শুকিয়ে গোলাজাত করা হয়ে থাকে।
প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোধে শুকিয়ে ধান ভেঙ্গে চাউলে রূপান্তর করা হয়। তবে বাজারে বিক্রি করার সময় নতুন করে আবার ধান শুকানের আর প্রয়োজন হয়না। এশিয়া মহাদেশে অন্য্ন্যা ১৯টি দেশের সাথে বাংলাদেশেও মানুষের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত।
চাউল রান্নার পর হয় ভাত। গোলা থেকে ধান নামিয়ে তা মেশিনে ভাঙ্গিয়ে তুলনামুলক অধিক ছোট পাত্রে রাখা হয় চাল। আর সেখান থেকেই চাল নিয়ে ভাত রান্না করা হয়। গোলা ভর্তি ধান না থাকলে এক সময় গ্রামের গৃহস্তা পরিবার সেই বাড়ীতে ছেলে মেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত দিতে আগ্রহী হত না।
একথা এখনো গ্রামাঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে ঘুরে-ফিরে। যাতে নষ্ট না হয় সে কারণে গোলার ধান রেখে সেই গোলার মুখ মাঠির লেপ দিয়ে বন্ধ রাখা হয়। আবার টাকার প্রয়োজন হলে গোলা থেকে ধান নিয়ে বাজারে বিক্রি করা হত। সে সময়ের সমাজ ব্যবস্থা এখনকার মত এত উন্নত ছিলনা। তখন চোর-ডাকাতের ভয়ে ধানের গোলার ভিতর স্বর্ণ ও টাকা পয়সা সংরক্ষণ করে রাখা হত।
বর্তমান সময়ের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা মাছ ধরার লুই ও ধান সংরক্ষণে রাখা গোলা আর বৃষ্টি থেকে বাচার জন্য জুইর কি তা চেনে না। সময়ের বিবর্তনে রামু উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তা হারিয়ে যাচ্ছে। বলতে গেলে হারিয়ে গেছে। অথচ আমরা ছিলাম মাছে ভাতে বাঙ্গালী।
উপজেলার গর্জনিয়া, কচ্চপিয়া,ঈদগড়,রশিদ নগর,চাকমারকুল,কাউয়াকুপ সহ আরো নানা ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে এলাকার লোকজন চাষাবাদ শেষে উৎপাদনকৃত ধান গুলো বিভিন্ন রাইচমিলে রাখার কারণে গোলার কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। ফলে ঐ শিল্পে জড়িত লোকজন আর বাশের তৈরি গোলা তৈরি না করায় গোলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।
Posted ৭:৫৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২২ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Chy