শহিদুলইসলাম,উখিয়া(৩১ অক্টোবর) :: ককসবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন মিয়ানমারের ষোল সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শরনার্থী ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লক পরিদর্শন করেন। বেশ কয়েক জন নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমের সাথে কথা বলেন। এর পর এনজিও সংস্হা অারটি এম পরিচালনাধীন প্রাথমিক স্বাস্হ্য সেবা কেন্দ্র পরির্দশন করেন।সেখানে ভর্তি হওয়া রোহিঙ্গাদের খোঁজ খবর নেন।
এর পর কুতুপালং ডি -৫ ব্লকের কমিউনিটি সেন্টারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ঘন্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল বলেন এন ভিসি কার্ড হাতে রাখলে ব্যবসা বানিজ্য উন্নতি তোমার জীবনের দাযিত্ব। তারা অারো বলেন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে স্হাপিত ঘর গুলোতে নানান সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেমন খাবার, স্বাস্হ্য, খেলা ধুলার ব্যবস্হা রাখা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে মুহিব উল্লাহ, মৌলভী সৈয়দুল হক সিরাজ, জাহেদ, শফি উল্লাহ সহ প্রায় পনেরজন নারী -পুরুষ বলেন,তাদের সব গুলো দাবী মেনে নিলে মিয়ানমারের ফিরে যাব,অন্যতায় যাব না। কারন এখানে ভাল অাছি। অামাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। অবাধে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। যাতে মিয়ানমারের ফিরে গিয়ে অাবারো সেনাবাহিনী নিযার্তন সহ্য করতে না হয়। নিজেদের জমি বসত বাড়ী ফিরে দেওয়ার দাবী জানান।
দুপুর দেড় দিকে উখিয়ার কুতুপালং ডি -ব্লক সংলগ্ন কমিউনিটি সেন্টারে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে সাংবাদিকের প্রেস ব্রিফিং কালে বলেন ককসবাজারের ক্যাম্পে অাশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যবাসন শুরু হবে। উওর রাখাইন রাজ্যে কোন ধরনের বৈষম যেন না হয়,সেজন্য স্হানীয় কর্মকর্তা ও পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর পর দুপুর দুইটার দিকে সড়ক যোগে ককসবাজারের উদ্দ্যোশে ক্যাম্প ত্যাগ করেন। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফার একটা তালিকা তুলে দেন। উক্ত তালিকায় ২৪হাজার ২শ ৪২জনের নাম হয়েছে।
এসময় সাথে ছিলেন বাংলাদেশেরর পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক,শরনার্থী সচিব অাবুল কালাম, ককসবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম সরওয়ার কামাল, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান, কুতুপালং ক্যাম্প ইনর্চাজ রেজাউল করিম।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়েরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি বুধবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখান থেকে সরাসরি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অাসেন। এসময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন ব্লক পরিদর্শন করেন এবং নির্যাতিত কিছু রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় আসে। এরপর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক। বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের সর্বশেষ প্রস্তুতি বিষয়টি উঠে আসে। বৈঠকে আগামী নভেম্বরের শুরুতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
Posted ৩:৩১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Chy