বৃহস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কোন পথে?

সোমবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
69 ভিউ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কোন পথে?

কক্সবাংলা ডটকম(১ সেপ্টেম্বর) :: গত সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হলেও কার্যতভাবে প্রত্যাবাসন করা যায়নি একজন রোহিঙ্গাকেও। শুরু করা হয়নি এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ প্রত্যাবাসন কিংবা টেকসই পরিবেশ সৃষ্টির কার্যবিধি।

ফলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে রোহিঙ্গা সংকট। ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা ক্রমে তীব্র হচ্ছে এবং ক্যাম্পগুলোতে নানা ধরনের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

এছাড়া গত সাত বছরে কত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়েছে তার সঠিক হিসাব নেই। নিয়মিত নিবন্ধন মনিটরিং, কাঁটাতারের বেড়া থাকার পরও ক্যাম্পগুলো থেকে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ পালিয়ে দেশের মূল জনস্রোতে মিশে যাওয়ার অভিযোগ মিলেছে।

এতে করে কক্সবাজারে ভয়াবহ সামাজিক নিরাপত্তা ও পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে দাবি স্থানীয় অধিকারকর্মীদের। কিছু টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্মনিবন্ধন পাচ্ছে। আবার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে পাসপোর্ট পেয়ে যাওয়ার খবরও রয়েছে ইতোমধ্যে।

অধিকারকর্মীরা বলছেন, একটা এলাকায় এত বিশাল জনগোষ্ঠীকে ঘিরে রাখলেই তারা সেখানে বছরের পর বছর থাকবেন, এমন নাও হতে পারে। স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে স্বাভাবিক জীবনে যাওয়ার চেষ্টা করাটা স্বাভাবিক। তবে সরকারি শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার না করে বলছে- খুব বড়সংখ্যক রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়েছে এমন না।

গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজারের উখিয়ার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে ফুটবল খেলার মাঠে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শরণার্থীর এই আশ্রয়শিবিরের ফুটবল খেলার মাঠে রোহিঙ্গারা জড়ো হচ্ছিলেন রোহিঙ্গা ঢলের সাত বছর পূর্তির ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের জন্য।

বেলা ১১টার দিকে বিশাল মাঠটি ভরে যায় ২০-২৫ হাজার রোহিঙ্গার উপস্থিতিতে। তাদের ৮০ শতাংশ কিশোর-তরুণ। সেখানে কয়েকজন বক্তার মুখে উঠে আসে রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা। জান্তা সরকারের দমন-নিপীড়ন ও গণহত্যার শিকার রোহিঙ্গারা এখন সে দেশের বিদ্রোহী আরাকান আর্মির হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন বলে বক্তারা অভিযোগ করেন। বিদ্রোহীরা রোহিঙ্গাদের গ্রাম জালিয়ে দেয়ার পাশাপাশি হত্যাও করছে তাদের।

এ অবস্থায় বাংলাদেশের নতুন সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতা চান রোহিঙ্গারা। সমাবেশে পাঁচ দফা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের সহিংসতা ও হামলা বন্ধ, আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বসবাসের সুযোগ তৈরি, জান্তা ও আরাকান আর্মিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জবাবদিহির ব্যবস্থা করা। সম্প্রতি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘নাগরিকত্বের’ ফাঁদ পেতেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

উখিয়া ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা মাঝি মোহাম্মদ ইয়াহিয়া বলেন, ‘আমাদের জন্য আরাকান আর্মি মোটেই ভালো না। এখন মিয়ানমার সরকার চাইছে রোহিঙ্গারা যেন মিয়ানমার সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তাহলে নাগরিকত্ব দেয়া যেতে পারে। তারা এখন রোহিঙ্গাদের আরাকান আর্মির সামনে দাঁড় করিয়ে দিতে চাইছে।

কেউ কেউ যুদ্ধে যোগ দিয়েছে বলে শুনেছি। এখান থেকেও (ক্যাম্প) দুয়েকজন গিয়েছে। আমাদের জন্য আসলে কেউই ভালো না। আমরা চাই নাগরিকত্ব। নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা না পেলে আমরা রাখাইনে ফিরব না।’

বাংলাদেশে সীমিত জায়গায় বিপুল রোহিঙ্গা শরণার্থী মানবেতর জীবনযাপন করেন। কিছুদিন পরপর আগুনে তাদের ঘর পোড়ে, ঝড়ে বিপদে পড়েন। ঘটে চলেছে সহিংসতাও। তাদের সন্তানরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, নেই কর্মসংস্থানও। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থ সহায়তার হারও চাহিদার চেয়ে ক্রমাগত কমছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে যা ৪৭ ভাগে নেমে এসেছে।

ভাগ্যবদলের চেষ্টায় মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছে অনেক রোহিঙ্গা। ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, ২০২৩ সালে সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের শিবির থেকে নৌকায় সাগরপথে রওনা দেয়, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ ছিল নারী ও শিশু। বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান পেরুতে গিয়ে মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে ৫৬৯ জন, যা ২০১৪ সালের পর সর্বোচ্চ।

দীর্ঘমেয়াদি এই সংকট নানা দিক দিয়ে বাংলাদেশের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলছে। বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় পরিস্থিতিতে এই সমস্যা যেন গুরুত্ব না হারায় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সজাগ থাকতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে দেশে ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা প্রধানের ওপর রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমস্যা ও টেকসই প্রত্যাবাসন একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত হোক, নিশ্চিত হোক রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার।

সুমাইয়া আকতার : শিক্ষার্থী, বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ।

69 ভিউ

Posted ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com