এ নিয়ে গত দুই মাসে বাজার ৪২ হাজার ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ নিয়ে গত দুই মাসে বাজার ৪২ হাজার ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আগের দিন বাজার মূলধন কমেছিল পাঁচ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
টানা দর পতনে বিনিয়োগকারী ও মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও হতাশা বাড়ছে।
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ধস ও পরবর্তী ১৪ বছরের নিম্নমুখী ধারায় পুঁজিবাজারের সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত।
বাজার পরিস্থিতি
রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনে সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট, যা ছিল গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৪৮৬৬ পয়েন্ট। অর্থাত্ গত তিন বছর ১১ মাসের মধ্যে বর্তমানে শেয়ারবাজারের সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।
অব্যাহত দর পতনের প্রতিবাদে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে সংগঠনটির নেতারাসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।
বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘২০১০ সালেও আমরা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যা গত আড়াই মাসে হয়েছি। ২০১০ সালে শেয়ারের দাম কমেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেয়ারের দাম ফেসভ্যালু ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
তাঁরা বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা ঠিকমতো জীবন যাপন করতে পারছি না। বর্তমান বিএসইসির কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। তাই আমরা দ্রুত বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি।’
বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘গত দুই মাসের টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৭০ শতাংশ কমে গেছে। আমরা সবাই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, আমরা এখানে ভিক্ষা করতে আসিনি। এখন পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব।’
টানা পতনের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি
পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশন (বিএসইসি)।
এই কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ‘বাজার পতনের নেপথ্য কারণ বের করে প্রতিবেদন দেবে চার সদস্যের কমিটি।’
রবিবার রাতে গঠিত এই কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ শামছুর রহমান, উপপরিচালক মোহাম্মদ ওরাইছুল হাসান রিফাত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।
সম্প্রতি টানা পতনের কারণ অনুসন্ধান, বাজার নিয়ে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, বাজার পতনে অনুঘটক হিসেবে কী কাজ করছে তা শনাক্ত করা এবং বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কমিশনের করণীয় সুপারিশ আকারে জানাতে হবে এই কমিটিকে।
বাজার পরিস্থিতি ও পতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে মূল্য আয় অনুপাত সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।
এ অবস্থায় বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’
Posted ১:২৭ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta