কক্সবাংলা ডটকম(৮ আগস্ট) :: করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই একটু একটু করে আশার আলো দেখাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহে অব্যাহত পতন থেকে বেরিয়ে আসার চিত্র দেখে অনেকের মধ্যে আস্থা ফিরতে শুরু করেছে।
কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপে ভুগতে থাকা শেয়ারবাজারে বেশ কিছুদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ঈদের আগের শেষ সপ্তাহে এই চিত্র ছিল সবচেয়ে বেশি, যা ঈদের পরও বিদ্যমান রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের অনেকে বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্ব শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই প্রভাব দেখা যাচ্ছে এখন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. রকিবুর রহমান মনে করেন, গ্রামীণফোনের মতো বড় প্রতিষ্ঠান এলে শেয়ারবাজার আবারও চাঙা হয়ে উঠবে। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এমন ইতিবাচক পরিস্থিতি বজায় থাকলে ধীরে ধীরে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। এখন বড় বড় ভালো কিছু প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আসা প্রয়োজন।’
ঈদের পর গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। চার দিনেই প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ফিরে পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ঈদের আগের শেষ সপ্তাহে একই পরিমাণ অর্থ ফিরেছে শেয়ারবাজারে। ফলে দুই সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ফিরেছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বৃদ্ধির ফলে এটি সম্ভব হয়েছে।
শেয়ারবাজারে বড় অঙ্কের অর্থ ফেরার সপ্তাহে বেড়েছে সবক’টি মূল্যসূচক। একইসঙ্গে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে অঙ্কটা ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা।
অর্থাৎ একসপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ৭ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছিল ৮ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ দুই সপ্তাহে টানা উত্থানে বাজার মূলধন বাড়লো ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
গত সপ্তাহে ডিএসই’তে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মূল্য বেড়েছে। আর কমেছে ৪২টির। এছাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টির দাম।
এদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসই’তে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসই’তে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯০৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ২৩৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৬৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
একই সময়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৫০ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। এর মাধ্যমে টানা সাত সপ্তাহ সূচকটি বৃদ্ধি পেলো। ফলে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৪০২ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসই’র শরিয়াহ সূচকও বেড়েছে। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬১ পয়েন্ট। এটিও টানা সাত সপ্তাহ বাড়লো।
বাছাই করা ভালো প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত ডিএসই’র আরেকটি সূচক হলো ডিএসই-৩০। এটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৫৫ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।
Posted ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৯ আগস্ট ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy