কক্সবাংলা ডটকম(৭ এপ্রিল) :: সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে চলমান বিতর্কে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে হেফাজতে ইসলামের ভেতরে। একের পর এক ফোনালাপ ফাঁস, দ্বিতীয় স্ত্রীর বড় ছেলের অনলাইন বক্তব্যসহ নানা তথ্য বিশ্লেষণ করে সংগঠনটির ভেতরে বেশ জটিল পরিস্থিতির আভাস পাওয়া গেছে। অনেকের মতে, সার্বিক ঘটনায় ঘরে-বাইরে বেশ চাপের মুখে পড়েছেন মামুনুল হক।
এদিকে মামুনুল হককে এখনই বহিষ্কার করার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হলেও তাঁর পদের ব্যাপারে ভবিষ্যতে কী করা উচিত, তা নিয়ে সংগঠনটির ভেতরে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংগঠনটির দুজন নেতা জানিয়েছেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে শেষ পর্যন্ত তাঁর পদ খোয়াও যেতে পারে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের রিসোর্টে সংঘটিত ঘটনার সময় হেফাজতকর্মীরা তাঁর পক্ষে অবস্থান নিলেও একের পর এক ভিডিও এবং তথ্য ফাঁসের ঘটনায় কর্মীদের পাশাপাশি দলটির নেতারাও বিস্মিত ও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কারণ তাঁরা জানতেন না যে মামুনুল হক রিসোর্টে নাম লেখানোর সময় তথ্য গোপন করেছেন।
তাছাড়া সরকারের সঙ্গে চরম বৈরী পরিস্থিতির মুখে এবং সারা দেশে অবনতিশীল কভিড পরিস্থিতির মধ্যে তিনি কিভাবে রিসোর্টে যেতে পারলেন, তা নিয়ে হেফাজতের বাইরে সমমনা ইসলামী দলগুলোর পাশাপাশি শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, মামুনুল হক শুধু হেফাজত নয়, ইসলামপন্থীদেরও সুনাম নষ্ট করেছেন। সর্বশেষ হেফাজতের ডাকা হরতালে নৈতিক সমর্থনদানকারী জামায়াত এবং বিএনপিও এ ঘটনায় হতবাক হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গত শনিবার রিসোর্টে সংঘটিত ঘটনা নিয়ে গত সোমবার হেফাজতের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরী কমিটির বৈঠকে মামুনুল হকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈঠকে উপস্থিত নেতারা একমত হয়ে তাঁকে বলেছেন, দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে তাঁর রিসোর্টে যাওয়া ঠিক হয়নি।
একটি সূত্র মতে, সোমবারের বৈঠকে রিসোর্টে নিয়ে যাওয়া নারী তাঁর বিবাহিত কি না, সে বিষয়েও ব্যাখ্যা চাওয়া হয় মামুনুল হকের কাছে। তিনি ওই নারীকে ‘বিবাহিত দ্বিতীয় স্ত্রী’ দাবি করলেও এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেন, ‘কাগজপত্র কিভাবে দেখাবেন? কারণ দ্বিতীয় বিবাহ করতে হলে তো প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে হয়। সেই কাগজপত্র তো নেই।’
জানতে চাইলে হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রব ইউসুফীর কাছে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র এই সহসভাপতি বলেন, ‘আমি মনে করি, একজন লোক তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে যেতেই পারেন। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, আমরা তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার চাই।’
দেশজুড়ে কভিড পরিস্থতির মধ্যে মামুনুল হকের রিসোর্টে যাওয়া ঠিক হয়েছে কি না—এই প্রশ্নে খেপে যান হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি দাবি করেন, ‘এ ঘটনায় হেফাজতের সুনাম নষ্ট হয়নি। কারণ তিনি ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী বিয়ে করেছেন।’
তবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের দুজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মামুনুল হক গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন কি না, তা নিয়ে দলের মধ্যে নানা আলোচনা আছে। গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে তাঁকে বাদও দেওয়া হতে পারে।’
‘গণমাধ্যম এবং সরকারের চাপ ব্যালান্স করার জন্য এখন মামুনুল হকের পক্ষে কথা বলা হলেও তাঁকে নিয়ে যে হেফাজত বিপদে পড়েছে, এটি দলের সবাই বুঝতে পেরেছেন।’ বলেন সংগঠনটির আরেক নেতা।
নরেন্দ্র মোদিবিরোধী হেফাজতের আন্দোলনে মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে বেশ সরব ছিলেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু রিসোর্টে সংঘটিত ঘটনায় তিনিও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মামুনুল হককে একজন ‘জঘন্য ব্যক্তি’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া যখন পুড়ছে তিনি তখন রিসোর্টে গেছেন ফুর্তি করতে। ফুর্তি করুন অসুবিধা নেই; কিন্তু বউ আসল কি না তার প্রমাণ দিতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে আলেম-উলামাদের মানুষ সমীহ করে চলে। কিন্তু মামুনুল হক তাদের ইজ্জত মেরেছেন। হেফাজত থেকে তাঁকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা উচিত।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক একই সঙ্গে হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এবং মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক। হেফাজতের মধ্যে নানা কারণে জনপ্রিয়তা থাকায় বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি হেফাজতে প্রভাব বিস্তার করে আছেন।
অনেকের মতে, এ কারণে তিনি কিছুটা বেপরোয়া হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। এ জন্য রিসোর্টে অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রথম দিকে তাঁর পক্ষে সোচ্চার হলেও আস্তে আস্তে ঘটনা প্রকাশিত হয়ে পড়ায় হেফাজতের নেতাকর্মীরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় দলের ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তার জন্য তহবিল গঠন করে সেখানে যাওয়ার আগের দিন শনিবারই ওই ঘটনায় হেফাজতের নেতারা আরো ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
তা ছাড়া দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা, একেকবার একেক নাম বলা, বন্ধুর সাবেক স্ত্রীকে ‘মানবিক কারণে বিয়ে করার’ যে বক্তব্য মামুনুল হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন, তা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা ও বিদ্রুপ চলছে।
হেফাজতের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মামুনুল হকের অতিমাত্রায় উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্যে এর আগেও হেফাজতকে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। ভাস্কর্য ও নরেন্দ্র মোদি সফর ইস্যুতে তাঁর উসকানিমূলক কথাবার্তায় হেফাজতের মুরব্বিরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু জনপ্রিয়তার ওপর ভর করে মামুনুল হক কাউকে তোয়াক্কা করেননি এবং একচেটিয়া বক্তব্য চালিয়ে গেছেন।
এদিকে তাঁর গোপন বিয়ের বিষয়টি নিয়ে আলেমসমাজের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। অনেক আলেম-উলামা এ ঘটনায় মামুনুল হকের বিচার চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারির বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় চলছে।
আজহারি বলেছেন, গোপনে বিয়ে করা বা বিয়ে গোপন রাখা ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী কঠিন অপরাধ। হজরত ওমর এই ধরনের ব্যক্তিদের কঠিন শাস্তি দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
সার্বিক প্রেক্ষাপটে হেফাজতের পদ থেকে মামুনুল হককে বহিষ্কার করা হতে পারে বলে মনে করেন বেশ কয়েকজন নেতা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে চালানো তাণ্ডবের ঘটনায় এবার অভিযুক্ত হচ্ছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। প্রথমে আড়ালে থাকলেও এবার শীর্ষ নেতাদের নাম মামলায় উঠে এসেছে। এরই মধ্যে রাজধানীর পল্টন থানায় করা দুটি মামলায় দলটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকে আসামি করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক ঘটনার পর এমন মামলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
গত সোমবার রাতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপদপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামান বাদী হয়ে ওয়ারীর এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক আইনসহ কয়েকটি ধারায় ১৭ জনের নামে শেষ মামলাটি করেন। এর আগে ২৬ মার্চের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছিল, যেখানে মামুনুলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরের ৩৫ নেতার নাম রয়েছে।
পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযোগের প্রমাণ পেলেই হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হবে। তদন্তের পাশাপাশি এরই মধ্যে কয়েকজন নেতার ওপর নজরদারি শুরু হয়েছে। তবে হেফাজতের নেতারা বলছেন, শীর্ষ নেতাদের হয়রানির জন্য পরিকল্পিতভাবে এসব মামলা করা হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মামুনুল মামলায় হুকুমের আসামি। আমরা তদন্ত করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ডিসি আরো বলেন, ‘আসামিরা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন, ২৬ মার্চ তাঁরা কোথায় ছিলেন, বায়তুল মোকাররমে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন কি না, তাঁরা নাশকতার নির্দেশ কিংবা উসকানি দিয়েছেন কি না, হামলার অর্থদাতা বা মাস্টারমাইন্ড কি না, তা শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সৈয়দ নুরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘যিনি মামলা করেছেন তিনি একজন ব্যবসায়ী। তিনি টাইলসের আঘাতে আহত হয়েছেন। এই পরিচয়ে তিনি মামলাটি করেছেন। তাঁর অন্য কোনো পরিচয় আছে কি না তা আমরা খুঁজে বের করব।’
এ মামলায় মামুনুল হক ছাড়া ১৬ আসামি হলেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নায়েবে আমির মাজেদুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী ও সহকারী মহাসচিব মাওলানা জসিম উদ্দিন। এ ছাড়া রয়েছেন সংগঠনটির টঙ্গীর সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাসুদুল করিম, অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, সহকারী দাওয়া সম্পাদক মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের ও দপ্তর সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব।
মঙ্গলবার মামলাটির এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৭ মে দিন ধার্য করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম ধীমান চন্দ্র মণ্ডলের আদালত।
এ ব্যাপারে হেফাজতের ঢাকা মহানগরের প্রচার সম্পাদক মুফতি আব্দুল মুমিন বলেন, ঘটনার এত দিন পর এই মামলায় প্রমাণ হয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানির জন্য এটি করা হচ্ছে। ২৬ মার্চের ঘটনায় পুলিশ পল্টন থানায় একটি মামলা করেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় ও ঢাকার ৩৫ জনকে আগেই আসামি করা হয়েছে। এরপর ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হাটহাজারী ও কুমিল্লার নেতাদের নাম উল্লেখ করে কেন এখানে সাজানো মামলা? এঁরা তো ঘটনার সময় ঢাকা ছিলেন না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্প্রতি সোনারগাঁর ঘটনার জের ধরে এই মামলা করা হয়েছে। আইনিভাবে হেফাজত এসব মামলা মোকাবেলা করবে।
এদিকে পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ২৮ মার্চের পর থেকে কয়েকজন নেতার ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। গত শনিবার সোনারগাঁয় মামুনুল হকের অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে হেফাজতের এই নেতার ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু হয়। নাশকতার নির্দেশদাতাদের সূত্রও খোঁজা হচ্ছে। এরই মধ্যে মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতার ব্যাপারে কিছু প্রমাণ মিলেছে। সরকারের সবুজ সংকেত পেলে মামুনুলসহ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। অন্যদিকে মামলা ও তদন্তের বিষয়টি টের পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন কয়েকজন হেফাজত নেতা।
গত ২৫ মার্চ থেকে হেফাজতের নাশকতায় অন্তত ১৭ জন নিহত ও সাংবাদিক, পুলিশসহ পাঁচ শতাধিক আহত এবং শত শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
Posted ২:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ এপ্রিল ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Chy