বৃহস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

১৫ ডিসেম্বর সম্মানজনক আত্মসমর্পণে পাকিস্তানিরা ব্যস্ত ছিল

সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
27 ভিউ
১৫ ডিসেম্বর সম্মানজনক আত্মসমর্পণে পাকিস্তানিরা ব্যস্ত ছিল

কক্সবাংলা ডটকম(১৫ ডিসেম্বর) :: ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১। আত্মসমর্পণের দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানি বাহিনী। গভর্নর আবদুল মোতালেব মালিক ও তার সামরিক উপদেষ্টা আগের দিনই পদত্যাগ করেছেন। সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্টকে একটি বার্তা

১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১। আত্মসমর্পণের দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তানি বাহিনী। গভর্নর আবদুল মোতালেব মালিক ও তার সামরিক উপদেষ্টা আগের দিনই পদত্যাগ করেছেন। সকালে জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্টকে একটি বার্তা পাঠান মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি। সেখানে তিনি দাবি করেন, সংঘাতের ইতি টানার লক্ষ্যে আলোচনার অনুমতি দেয়ার জন্য অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চান প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া।

ওই বার্তায় আরো উল্লেখ করা হয়, পাকিস্তানি সেনাদের জন্য সম্মানজনক শর্ত এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা চান ইয়াহিয়া খান।

যদিও এর আগের সপ্তাহেই রাও ফরমান আলি নিজেই যুদ্ধবিরতির এমন আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে সে উদ্যোগে ইয়াহিয়ার সমর্থন ছিল না। প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয় ইসলামাবাদ। পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার বিষয় বিবেচনায়ই হয়তো শেষ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) দখল ছেড়ে দিতে সম্মত হন ইয়াহিয়া খান।

পূর্ব পাকিস্তানে ইসলামাবাদের সেনা কমান্ডার জেনারেল নিয়াজিও ১৪ ডিসেম্বরই যুদ্ধবিরতির পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। যদিও কয়েকদিন আগেও আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন নিয়াজি। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি নয়াদিল্লিতে পাঠানোর জন্য ঢাকায় মার্কিন কনসালকে অনুরোধ করেন নিয়াজি। এতে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে চিহ্নিত অঞ্চলগুলোয় পাকিস্তানি বাহিনীর গ্রুপিংগুলোকে পুনঃসংগঠিত করার সুযোগ ও তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাওয়া হয়।

এছাড়া বিহারিসহ মার্চ থেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারকে সহায়তাকারীদের নিরাপত্তারও দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে নিয়াজী প্রতিশ্রুতি দেন, বিরোধের স্থায়ী মীমাংসায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই তিনি মেনে নেবেন।

১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার সময় জুলফিকার আলি ভুট্টো ছবি: ডন

এদিকে পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা মনে করছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সম্মানের সঙ্গে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার পথকেই বেছে নিতে পারে ইসলামাবাদ। অন্যথায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানেও পরিস্থিতি তাদের জন্য আরো প্রতিকূল হয়ে উঠতে পারে।

পূর্ব পাকিস্তান হারিয়েও পশ্চিমে যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে যদি সেনাবাহিনীকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে অক্ষতভাবে টিকিয়ে রাখা যায়; তাহলে তা পাকিস্তানে আরো গোঁড়া সামরিক নেতৃত্বের উত্থানের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আর স্থানীয় গণমাধ্যমের ওপর পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণ দেশটির জনগণের সামনে এ পরাজয়কে আরো গ্রহণযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

ঢাকার সামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোয় ভারতীয়দের গোলাবর্ষণ শুরু হয় ১৪ ডিসেম্বর। ওইদিন ভারতীয় বাহিনীর সাঁজোয়া ও পদাতিক ইউনিটগুলো নগরীর ‘বহিঃপ্রতিরক্ষা পরিধিগুলো’ (আউটার ডিফেন্স পেরিমিটার) খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছে। ভারতীয়রা তখন দাবি করছিল, পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা থেকে পালানোর সব পথ তারা বন্ধ করে দিয়েছে।

একই সঙ্গে তাদের এ-ও প্রত্যাশা ছিল পাকিস্তানিরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার রক্তাক্ত পথটিকে এড়িয়ে যাবে। এ কারণে ভারতীয়রা তখনো সর্বাত্মক আক্রমণের পথে হাঁটেনি। আবার শহরের আশপাশে বেশকিছু পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছে বলেও সে সময় দাবি করছিল ভারতীয়রা।

সে সময় ঢাকার বেসামরিক প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছিল। আর ইসলামাবাদ নিযুক্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বেশির ভাগই হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন।

ওইদিন বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে ভারতীয় বাহিনী প্রায় আট মাইল পর্যন্ত অগ্রসর হয়। সে সময় ভারতীয়দের পক্ষ থেকে বলা হয়, নগরীটির ওপর আকাশ ও সমুদ্র থেকে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। গোটা পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানি বাহিনী তখন বিচ্ছিন্ন কিছু স্থানের ওপর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পেরেছে।

আর যেসব জায়গায় ভারতীয় বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করতে পেরেছে, সেখানেই ভারতপ্রত্যাগত শরণার্থীরা দলে দলে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের একজন প্রতিনিধির মতে, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন ৩০ হাজার মানুষ ফিরে এসেছে। তাদের বেশির ভাগই নিজ নিজ পরিবারের প্রধান, যারা মূলত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ওইদিন প্রকাশ হয়, বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ সে সময় ভারতীয়দের দক্ষতাকে কাজে লাগানোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বাংলাদেশ সরকারকে প্রশাসনিক নেটওয়ার্ক তৈরিতে সহায়তার জন্য ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের পাঠাতে সম্মত হয়েছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষের এ চাওয়ার পেছনে আরো একটি উদ্দেশ্য ছিল। সেটি হলো দেশের যেসব স্থানে প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে, ‘কট্টরপন্থী’ গোষ্ঠীগুলো যাতে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণে নিতে না পারে তা নিশ্চিত করা।

 

27 ভিউ

Posted ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com