কক্সবাংলা ডটকম(২৫ জানুয়ারী) :: আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)-এর উপাচার্য ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মেগা প্রজেক্টের প্রথম পদ্মা সেতুতে বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি) মিলনায়তনে সিভিল ইংঞ্জিনিয়ারিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘ক্যারিয়ার এক্সপো-২০২০’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, দেশে অনেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেও বেকার থাকছে। প্রতিবছর দেশে অনেক প্রকৌশলী তৈরি হলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। তাদের দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, দেশে অনেক অনুমোদনহীন কারখানা চালু রয়েছে, যেগুলো পরিবেশকে মারাত্মকভাবে দূষণ করছে। এখনই নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে এগুলো বন্ধ করতে হবে, তা না হলে আমাদের পরিবেশের ওপর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডাক্তার এম আর কবির, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে ডিপার্টমেন্টের টেকনিক্যাল সার্ভিসিংয়ের অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার ড. মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, রিজ পার্ক ফোল্ডিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার বদরুল হাসান খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. আলম তালুকদারসহ আরও অনেকে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) সরকারের ১০ মেগা প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মা সেতুতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৭১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এ প্রকল্পে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৩৭০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মেট্রোরেল প্রকল্পে ৭ হাজার ২১২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নানা জটিলতা কাটিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। ২০১৭ সালে নদীর গভীরতার কারণে সেতুর ১৪টি পিলারের নকশা পরিবর্তন করা হয়। মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৯টি স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে ২ হাজার ৮৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৬৩ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জটিল সব কাজ শেষ। এখন শুধুই অগ্রগতি। ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করে সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।’
এদিকে, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পটির কাজও এগিয়ে চলেছে। সেতু উদ্বোধনের দিন থেকেই চলবে ট্রেন। এই রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা ৬৯ পয়সা। ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন নির্মিত হয়ে গেছে। ভাঙ্গা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ খুব অল্প সময়ে শেষ করা হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যেই শেষ হবে পদ্মাসেতুতে রেলের সব কাজ—এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ের আওতায় আনার লক্ষ্যে ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু দিয়ে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প-১ (ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা) এবং প্রকল্প-২ (ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর) নামের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। সরকারের এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
Posted ১:৩১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Chy