কক্সবাংলা ডটকম :: ২৩ বছর পর সুদে-আসলে বদলা নিল ভারতীয় দল। এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ১০ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন এবং বদলা নিল ভারত। জয়ের জন্য টার্গেট ছিল ৫১ রানের। ঝোড়ো গতিতে সেই রান ২৬৩ বল বাকি থাকতে তুলে ফেললেন শুভমান গিল ও ঈশান কিষাণ। বল হাতে মহম্মদ সিরাজ ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কা টস জিতে ব্যাট করতে নেমে গুটিয়ে গিয়েছিল ৫০ রানে। রোহিত শর্মা অধিনায়ক হিসেবে ছুঁলেন মুহম্মদ আজহারউদ্দিন ও মহেন্দ্র সিং ধোনির কীর্তি।
এশিয়া কাপে এই নিয়ে অষ্টমবার চ্যাম্পিয়ন হলো ভারত। ২০১৮ সালের পর এবারের এশিয়া কাপ ভারত জিতল রোহিত শর্মার নেতৃত্বে। ১৯৯১ ও ১৯৯৫ সালে ভারত এশিয়া কাপ জিতেছিল, অধিনায়ক ছিলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। রোহিত ও আজহার অধিনায়ক হিসেবে দেশকে ২ বার এশিয়া কাপ জেতালেন ৫০ ওভারের ফরম্যাটেই। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বেও ভারত দু-বার এশিয়া কাপ জিতেছে।
২০১০ সালে ৫০ ওভারের ফরম্যাটে, ২০১৬ সালে টি ২০ ফরম্যাটে। সবচেয়ে কম বলে ফয়সালার নিরিখে আজকের ভারত-শ্রীলঙ্কা (১২৯ বল) ফাইনাল রইল তিন নম্বরে। ২০২০ সালে নেপাল বনাম আমেরিকা ম্যাচে ফয়সালা হয় ১০৪ বলে। ২০০১ সালে শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবোয়ে ম্যাচ শেষ হয় ১২০ বলের মধ্যেই।
বল বাকি থাকতে জয়ের নিরিখে ভারতের আজকের সাফল্যই সেরা। ২০০১ সালে কেনিয়ার বিরুদ্ধে ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত ১০ উইকেটে জিতেছিল ২৩১ বল বাকি থাকতে। সেই রেকর্ড ভেঙে আজ ভারতের জয় ১০ উইকেটেই, ২৬৩ বল বাকি থাকতে।
১৯৭৯ সালে ৬০ ওভারের ওডিআইয়ে ২৭৭ বল বাকি থাকতে ইংল্যান্ড হারিয়েছিল কানাডাকে, সেটি বিশ্বরেকর্ড। ৫০ ওভারের ওডিআইয়ে শ্রীলঙ্কা ২০০১ সালে জিম্বাবোয়েকে হারায় ২৭৪ বল বাকি থাকতে। ২০০৩ সালে শ্রীলঙ্কাই ২৭২ বল বাকি থাকতে হারিয়েছিল কানাডাকে।
২০২০ সালে নেপাল ২৬৮ বল বাকি থাকতে আমেরিকাকে হারায়। ২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ড ২৬৪ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশকে পরাস্ত করেছিল। ভারতের ২৬৩ বল বাকি থাকতে ছিনিয়ে নেওয়া জয় রইল কিউয়িদের পরেই। ৬.১ ওভারে বিনা উইকেটে ৫১ রান তুলে ফেলে ভারত।
ঈশান কিষাণ ১৮ বলে ২৩ ও শুভমান গিল ১৯ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে, শ্রীলঙ্কা ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে গুটিয়ে যায়। মহম্মদ সিরাজ ৬টি, হার্দিক পাণ্ডিয়া ৩টি ও জসপ্রীত বুমরাহ ১ উইকেট নেন।
২৩ বছর পর এশিয়া কাপের ফাইনালে সুদে-আসলে বদলা নিল ভারতীয় দল। ২০০০ সালের ত্রিদেশীয় ট্রফির ফাইনালে ভারতীয় দলকে মাত্র ৫৪ রানে অল-আউট করে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
রবিবার এশিয়া কাপের ফাইনালে মাত্র ৫০ রানে শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ করে দিলেন মহম্মদ সিরাজ, জসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়ারা। হাসতে হাসতে এশিয়া কাপ ভারতের।
প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সেটাই বুমেরাং হয়ে তাদের আঘাত করল। মহম্মদ সিরাজের আগুনে বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারল না শ্রীলঙ্কা। মাত্র ৫০ রানে গুটিয়ে যায় তারা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইশান কিষাণ ও শুভমান গিল মাত্র ৬ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন। এদিন শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা ১০০ বলও খেলতে পারেননি। ৫০ ওভারের ম্যাচে মাত্র ৫০ রান করেন তারা।
এর আগে ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪৩ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। সেটাই এখনও পর্যন্ত একদিনের ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার সব থেকে কম স্কোর। এদিন সেই লজ্জা তারা ঢাকল বটে! তবে এমন হার সত্যিই লজ্জাজনক।
এই ম্যাচে যেন জীবনের সেরা ফর্মে ছিলেন মহম্মদ সিরাজ। একদিনের ক্রিকেটে যুগ্মভাবে দ্রুততম পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির গড়ে ফেললেন তিনি।একইসঙ্গে প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে এই ইতিহাস লিখলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে কোকাকোলা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা ম্যাচ হয়েছিল। সেদিন শারজায় প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৯৯ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা।
ওই ম্যাচে ১৬১ বলে ১৮৯ রান করেছিলেন সনৎ জয়সূর্য। সেই সময় তিনিই শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ছিলেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫৪ রানেই অল-আউট হয়ে যায় ভারতীয় দল। তাও মাত্র ২৬.৩ ওভারে। রবিন সিং সর্বোচ্চ ১১ রান করেছিলেন। তিনি ছাড়া আর কোনও ভারতীয় ব্যাটার দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি সেদিন।
Posted ৯:১০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Chy