কক্সবাংলা ডটকম(৫ মার্চ) :: ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের আরও চার কোটি ডোজ কিনতে চায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসচিব বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, ‘আলোচনা চলছে। দেখা যাক কী হয়।’ এ বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
গত ৫ নভেম্বর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। দুই চালানে সেই চুক্তির ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছেছে। এর আগে, ভারত থেকে উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যা গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্যসচিব রয়টার্সকে আরও জানান, বর্তমানে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন আনলেও আরও ডোজ কেনার ক্ষেত্রে কাদের মাধ্যমে আনা হবে তা এখনো নির্ধারণ করেনি সরকার।
বেক্সিমকোর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা এখনো ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ অর্ডার করিনি। এখন পর্যন্ত আমাদের অর্ডার তিন কোটি ডোজ। আরও ডোজ অর্ডারের বিষয়টি সরকারের ওপর নির্ভর করছে।’
স্বাস্থ্যসচিব রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সমর্থিত অ্যালায়েন্সের মাধ্যমেও ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। জুনের মধ্যেই প্রথম চালানে প্রায় এক কোটি ডোজ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। মারা গেছেন আট হাজার ৪৩৫ জন। আর সুস্থ হয়েছেন পাঁচ লাখ ৪৬৮ জন।
দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৫ লাখ ৮১ হাজার ১৬৯ জনকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে।
করোনার ব্রাজিলের ধরনের বিরুদ্ধেও কাজ করে অক্সফোর্ডের টিকা: রিপোর্ট
ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের যে নতুন ধরন দেখা দিয়েছে, সেটার বিরুদ্ধেও দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি পরিচালিত একটি গবেষণার প্রাথমিক তথ্য থেকে এ কথা জানিয়েছে গবেষণা জ্ঞানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র।
সূত্রটি শুক্রবার রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূত্র জানিয়েছে, তথ্যটি ইঙ্গিত করে করোনার ব্রাজিলিয়ান এই ধরনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার জন্য অক্সফোর্ডের টিকার পরিবর্তন করার প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ এই ধরনের বিরুদ্ধেও দ্রুত কাজ করে টিকাটি।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষণার ফলাফল প্রকাশ্যে আসেনি এখনও, তাই সূত্রটি অনুরোধ করেছে, যেন তার নাম প্রকাশ না করা হয়। তবে সূত্রটি ওই ধরনের বিরুদ্ধে ঠিক কীভাবে কাজ করে, সেই কার্যকারিতা সরবরাহ করেনি। বলছে, গবেষণার পুরো ফলাফল শিগগির প্রকাশ করা উচিত। সম্ভব হলে মার্চেই প্রকাশ করা উচিত।
এর আগে আরেক প্রাথমিক ফলাফল ইঙ্গিত করেছিল, করোনাভাইরাসের দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের বিরুদ্ধে কম প্রতিরোধ গড়ে তুলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। পরবর্তীকালে দেশটিতে টিকা প্রয়োগ বিরত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
শুক্রবারের গবেষণা তথ্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ফিয়োক্রুজ, যিনি এই গবেষণার ভিত্তি তৈরির একজন, তিনি রয়টার্সকে বলেন, এটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে হয়েছে বলে গবেষণাটির কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
এছাড়া এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও।
ব্রাজিল বর্তমানে করোনাভাইরাসের নৃশংস এবং দীর্ঘস্থায়ী দ্বিতীয় তরঙ্গের মুখোমুখি হচ্ছে। এরমধ্যেই আবার নতুন ধরন দেখা দিয়েছে।
বুধবারও দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৯১০ জন। যা কিনা একদিনে সর্বোচ্চ।
Posted ৩:৫২ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৬ মার্চ ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta