কক্সবাংলা ডটকম(১৫ অক্টোবর) :: টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার। তৃতীয় মেয়াদে প্রায় তিন বছর অতিক্রম হতে চলছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ একের পর এক সংকট মোকাবেলা করছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে সামনে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১২ বছরের বেশি সময় যে দেশ পরিচালনা করেছে, সে পরিচালনার মেয়াদকাল কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংকট এবং সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে যে সমস্যা মোকাবেলা করতে হচ্ছে তা হলো ষড়যন্ত্র এবং নানা রকম অপপ্রচার। সামনে এটি আরো ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে। আওয়ামী লীগের নেতারাও স্বীকার করছেন নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, তত ষড়যন্ত্র এবং নানা রকম বিভ্রান্তি, মিথ্যাচার তীব্র হবে। এটি মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগকে এগুতে হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা স্বীকার করছেন, সমনে আরো কঠিন পথ আওয়ামী লীগকে পাড়ি দিতে হবে।
আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুলভাবে বিজয়ী হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ফেব্রুয়ারিতে বিডিআর বিদ্রোহের মুখোমুখি হতে হয়। স্পষ্টতই এটি ছিল সরকার উৎখাতের একটি নীল নকশা। কিন্তু জনগণের বিপুল ম্যান্ডেটের কারণে সে ষড়যন্ত্র বেশিদূর এগোতে পারেনি। বিশেষ করে, সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়চিত্ত নেতৃত্ব এবং সঠিক সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে শেষ পর্যন্ত সামাল দিতে সক্ষম হয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরেও আওয়ামী লীগ অনেক বড় চক্রান্তের মুখোমুখি হয়েছিল।
বিশেষ করে, বিএনপির এই নির্বাচন বর্জনের পর হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টিও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসলেও অনেক প্রার্থী নির্বাচন থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ২০১৫ সালেও আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও ইত্যাদি করে একটা প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিস্থিতিও আওয়ামী লীগ দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সময় দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে, কিংবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে নানারকম প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য ষড়যন্ত্র হয়েছে। সেগুলো মোকাবেলা করেই যুদ্ধাপরাধীর শিরোমণিদের বিচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৩ সালের হেফাজতের ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি ছিল সরকার পতনের আরেকটি ষড়যন্ত্র। সেই সময়ে হেফাজতের নেতৃত্বে সারাদেশ থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শাপলা চত্বরে জড়ো হয়েছিল এবং সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সেখানে যেন তারা থাকে তার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি এবং জামাত দিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকারের দৃঢ়তা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ঘিরেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই সময় হেফাজতের মামুনুল হক এবং প্রয়াত জুনায়েদ বাবুনগরীরা সারাদেশে একটি তুলকালাম কাণ্ড বাধাতে চেয়েছিল। সেটিও সরকার দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করে। এখন নির্বাচনের আগে আগে নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং সামনে আরো বেশি ষড়যন্ত্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনাটি তার একটি বড় প্রমাণ।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইডেন থেকে বিরামহীনভাবে সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসিত, নোংরা, আপত্তিকর বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে এবং এই সমস্ত বক্তব্যগুলো সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীরা। ফলে কিছু কিছু বক্তব্য নিয়ে মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। একে অন্যকে প্রশ্ন করছেন এসব বক্তব্য সত্য কি না। এরকম একটি পরিস্থিতি নির্বাচনের আগে আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছে। নির্বাচনের আগে আরো অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে আওয়ামী লীগকে। এটি মানছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও।
Posted ১০:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta