শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫১ আসনে নির্বাচন করবে জামায়াত

শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭
762 ভিউ
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫১ আসনে নির্বাচন করবে জামায়াত

কক্সবাংলা ডটকম(১৬ জুন) :: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটির সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। দলটি ৫১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে জানা গেছে।

জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নিজস্ব পদ্ধতিতে চালানো জরিপ অনুযায়ী ৫১টি আসনের মধ্যে ২৯টি আসনে তাদের জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। অন্য আসনগুলোয়ও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। জোটগতভাবে হলেও কোনো প্রতীক না নিয়ে স্বতন্ত্রভাবেই নির্বাচন করবে দলটি। তবে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে হলেও দলীয় প্রতীক ফিরে পাওয়ারও আশা করছেন নেতাকর্মীরা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে জামায়াতে পক্ষে-বিপক্ষে তৈরি হয় দুটি ধারা।

মূলত ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিতর্ক চলে আসছে। এর পর যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলা সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের জেল থেকে পাঠানো একটি চিঠির সূত্র ধরে স্পষ্টই দুটি ধারা তৈরি হয় জামায়াতে।

সবকিছু ছাপিয়ে জামায়াতের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আবার অনেকটা প্রকাশ্যে আসে মূলত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে। জামায়াতের অপেক্ষাকৃত লিবারেল ধারাটি চাচ্ছে না এই মুহূর্তে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে। এতে জামায়াতের অস্তিত্ব বিনাশ হওয়ার পাশাপাশি সরকারের রোষানলে পড়ার আশঙ্কা করছেন। বিদেশে অবস্থানরত বিশেষ করে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত সংগঠনটির প্রভাবশালী কিছু নেতা কোনোভাবেই চাচ্ছেন না নির্বাচনে যেতে।

এ ক্ষেত্রে তারা বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি আন্দোলনের কথা তুলে ধরেছেন। তবে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে যারা অবস্থান নিয়েছেন তারা যে কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইছেন। তারা বলছেন, ক্ষুণœ হওয়া ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা ও অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার তাগিদেই আগামী সংসদ নির্বাচনকে কাজে লাগাতে হবে। এ কারণে শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায় রমজানের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে জামায়াতের দায়িত্বশীল পর্যায়ে বেশ কয়েকটি সভা হয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন নিয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা হয়।তবে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচনে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে নির্বাচনে গেলে সংগঠনের দীর্ঘমেয়াদি লাভ-ক্ষতির বিষয় নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়। তবে কোনো দল বা সংগঠনের ব্যানারে না গিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।

ওই বৈঠকের আলোচনার মূলে ছিল সংগঠনটির চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে বা সংগঠনটি থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী। বৈঠকে উপস্থিত শিবিরের সাবেক এক শীর্ষ নেতা ও বর্তমানে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সবাইকে আশ্বস্ত করেন, নির্বাচনে গেলে সবাই একজোট হয়েই রাজপথে থাকবেন। দোষ-ত্রুটি বাদ দিয়ে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই কাজ করবেন।

কারো মধ্যে যদি বর্তমান সংগঠনের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা না থাকে তবে তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবেন। কিন্তু বিদ্রোহ করে নতুন সংগঠন গড়া বা অন্য দলে যোগ দেবেন না। বৈঠকে উপস্থিত একজন নায়েবে আমিরের একান্ত সহযোগী আমাদের সময়ের সঙ্গে আলাপকালে এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।

সূত্র জানায়, নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের প্রাথমিক জরিপের কাজ শেষ। দলের সংসদীয় বোর্ড ইতোমধ্যেই বাকি কাজ শুরু করেছে। দলের গঠনতন্ত্রের ২৫ ধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সংসদীয় বোর্ডের দায়িত্বে রয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামত-প্রস্তাব ও তথ্য যাচাই করে এই বোর্ডই প্রার্থিতার বিষয়টি চূড়ান্ত করবে।

আগামী নির্বাচনে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ও সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে ১০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলা হলেও জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জামায়াত তাদের জরিপ অনুযায়ী ৫১টি আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। তাদের জরিপ অনুযায়ী এর মধ্যে ২৯টি আসনে তাদের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ছাড়া ১১টি আসনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ার পাশাপাশি জয়লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। বাকি এগারোটি আসনে প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ের কাজ ও সরকারি দলের ভূমিকার ওপর অনেকাংশে জয় নির্ধারণ করবে। এ ছাড়া এসব আসনে সংগঠনের বেশকিছু নেতা রয়েছেন, যারা কর্মীদের কাছে খুব জনপ্রিয়। তাই তাদের নির্বাচনমুখী রাজনীতিতে যুক্ত করার জন্যই এ আসনগুলো বাছাই করা হয়েছে।

সূত্র আরও দাবি করেন, ১৯৯১ সাল থেকে সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত যেসব আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের জয়লাভ করার রেকর্ড রয়েছে, এর বাইরে জয়লাভ না করলেও দীর্ঘদিন ধরেই বিপক্ষ দলের সাথে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলে বেশ কয়েকটি আসনে। এসব আসনে বেশি জোর দেবে সংগঠনটি।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজধানীর একটি থানার সাবেক আমির আমাদের সময়কে জামায়াতের কৌশল সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, বর্তমানে কোনোভাবেই সংঘাত চান না জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। আপাতত একেবারেই নীরব থাকার পরিকল্পনা তাদের। কর্মসূচি পালনের নামে কোনো রকম ঝুট-ঝামেলায় জড়াতে চান না। এর মাধ্যমে নিজেদের একটা ক্লিন ইমেজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হবে।

দলের নীতিনির্ধারকদের ধারণা, এতে জামায়াত সম্পর্কে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সর্বমহলে এতদিন যে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছিল, তা প্রশমন হবে। ধীরে-ধীরে দলটির প্রতি সবার সহানুভূতির জায়গা তৈরি হলে সবদিক থেকেই লাভবান হবে।

জোটের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জোটগতভাবে জামায়াতের কোনো ভূমিকাই ছিল না। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি ডাকলেও জামায়াত নেতারা পাশে ঘেঁষেনি। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির মধ্যে জামায়াত নিয়ে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হয়। তাই বর্তমানে জামায়াত নেতারা চাচ্ছেন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে জোটগত সম্পর্ক রক্ষার। নিজেদের স্বার্থে বিএনপিকে পাশে রাখার জন্য তারা সব ধরনের চেষ্টা করবে।

এ কারণেই সংগঠনটির জন্য প্রতিকূ’ল পরিবেশেও বিএনপির ইফতার মাহফিলে সদলবলে যোগদান করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। সাধারণত এ ধরনের প্রোগ্রামে জামায়াতের প্রতিনিধিরা যোগদান করেন না। দলবেঁধে বিভিন্ন স্থরের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণের ইতিহাস এবারই প্রথম। এর মূল কারণ জামায়াত সম্পর্কে বিএনপির মধ্যে তৈরি হওয়া ভুল ধারণা পরিবর্তনের চেষ্টা। এ নিয়ে অবশ্য বিএনপির নেতারাও খুশি। এমনটিই জানালেন জামায়াতের ওই নেতা।

ওই ইফতার মাহফিলে জামায়াতের বেশ কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতাও সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনমুখী দল হিসেবে জামায়াত আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তবে আসন ঠিক করার বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

জামায়াতের একাধিক সূত্র জানায়, নীরব থাকা ও বিএনপির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখার মূল কারণ আগামী নির্বাচন। তবে জোটগতভাবে হলেও কোনো প্রতীকের অধীনে না গিয়ে শেষতক স্বতন্ত্রভাবেই জামায়াতের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তবে জামায়াতের মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতার দাবি, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে হলেও দলীয় প্রতীক ফিরে পাবেন তারা।

এ জন্যই কোনোরকম ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ে জড়াচ্ছেন না নেতাকর্মীরা। সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আইনিভাবেও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সার্বিক বিষয়ে জানতে জামায়াতের অফিসিয়াল ই-মেইলের ঠিকানায় মেইল করলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

ফোন করা হয় জামায়াতের নায়েবে আমির ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল পদমর্যাদার বেশ কয়েকজন নেতাকে। প্রত্যেকের ফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। কথা হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরকেন্দ্রিক দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে। তবে তারা নাম প্রকাশ করতে অনীহা প্রকাশ করেন।

762 ভিউ

Posted ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৭ জুন ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com