কক্সবাংলা ডটকম(১৫ সেপ্টেম্বর) :: করোনার প্রকোপ কমার সাথে সাথে রাজনীতি মাঠে গড়াচ্ছে। ৯ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ দীর্ঘ এক বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক করেছে এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বৈঠকের পর পরই বিএনপি তিন দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করছে, আজ বৈঠকের দ্বিতীয় দিন চলছে। রাজনীতির মাঠ খুব শীঘ্রই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে যে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনীতিবিদরা আবার চালকের আসনে বসবেন।
এরকম একটি প্রেক্ষাপটে আমলাদের কর্তৃত্ব কমবে কিনা সে নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে গত বছরের মার্চে প্রথম করোনার প্রকোপ শুরু হয়, করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার সাথে সাথে রাজনীতিবিদরা সাইড লাইনে চলে যান আর আমলারা পাদপ্রদীপে আসেন। প্রত্যেকটি জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন করে সচিবকে। জেলায় এমপিদের কর্তৃত্ব খর্ব হয়ে যায় এবং জেলা প্রশাসকদের কর্তৃত্বে জেলার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।
এমনকি ত্রাণ, প্রধানমন্ত্রীর অনুদান ইত্যাদি সব কার্যক্রমে আমলারা পাদপ্রদীপের আসেন। ফলে আমলাদের কর্তৃত্ব অন্য সময়ে তুলনায় অনেক বেড়ে যায়, এ রকম অবস্থায় রাজনীতিবিদদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা যায়। এমনকি জাতীয় সংসদের অধিবেশনে তোফায়েল আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আমলাদের কর্তৃত্ব নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। এই প্রেক্ষাপটে বিরোধীদলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে এখন আমলাদের দিয়ে দেশ চালানো হচ্ছে রাজনীতিবিদরা এখন সাইডলাইনে।
এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের রাজনৈতিক কার্যক্রম নতুন করে শুরু হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে রাজনীতিবিদদেরকে কর্তৃত্বের আসনে বসতে হবে, বিশেষ করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা যদি এখন স্থানীয় পর্যায়ের চালকের আসনে বসতে না পারেন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো না নিতে পারেন তাহলে আগামী নির্বাচনে তাদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। আর এই বাস্তবতায় আগামী দিনগুলোতে স্থানীয় পর্যায়ে থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বাড়তে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।
আমলাদের যে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব, সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমলাদের যে প্রভাব তা কিছুটা হলেও কমতে পারে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কিছু ঘটনায় আমলাদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বরিশালের ঘটনা কিংবা ফরিদপুরের ঘটনার মতো ঘটনা যেন বাংলাদেশে আর কোথাও না ঘটে, বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এ ধরনের ঘটনাগুলো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
আর সেই বাস্তবতায় রাজনীতিবিদ এবং আমাদের মধ্যে একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। ইতিমধ্যেই অনেকগুলো জেলাতে রাজনীতিবিদ এবং আমলাদের মাঝে সমন্বয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে কোথাও কোথাও রাজনীতিবিদরা নির্বাচনী এলাকায় ঘনঘন যাওয়া-আসা করছেন।
বিশেষকরে করোনার প্রকোপ কমার সাথে সাথে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়া শুরু হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমলারা একটু বেকবেঞ্চে চলে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক কর্তৃত্ব সামনে আসতে পারে এমন পর্যবেক্ষণ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Posted ৩:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta