কক্সবাংলা ডটকম(২১ মার্চ) :: গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেয়া ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের (আমেরিকা) ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের পটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এমন অভিযোগ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি নেত্রী ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসেন। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা না দেয়ায় আমেরিকার ষড়যন্ত্রে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। কারণ, গ্যাস উত্তোলন করতো আমেরিকার কোম্পানি, বিক্রি করতো ভারতের কাছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম- এটা আমার দেশের জনগণের সম্পদ। জনগণের সম্পদ তাদেরকে বঞ্চিত করে আমি কারও কাছে বিক্রি করতে পারি না।’
এসময় নৌকায় ভোট চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেন, আপনাদের উন্নয়ন দিতে পারব। একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই উন্নয়ন হবে। নৌকায় ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আসতে সাহায্য করবেন, হাত তুলে ওয়াদা করেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। আমিও আপনাদের অধিকার আদায়ে প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দেব। আপনাদের অধিকার আদায়ে আমি যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।’
পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শেখ হাসিনা বলেন: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতেই চাকরিতে তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনীদের জন্য কোটা চালু করা হয়েছে। তারা যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে বাংলাদেশ আসতো না, স্বাধীন বাংলাদেশ দেখা সম্ভব হতো না। তারা যুদ্ধ করেছিলো বলেই আপনারা আজ বড় পদে আসীন হতে পারছেন। তাই কোটা থাকবে। তবে, চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না হলে মেধাবীদের সুযোগ দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ আসলে উন্নয়ন হয় আর বিএনপি আসলে দেশ জুড়ে খুন-খারাবি করে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন: ‘বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে খুনের রাজনীতি শুরু করে। হিন্দু-মুসলিম কেউ তাদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়নি। এমনকি তাদের নিজেদের লোককেও তারা ছাড়েনি।’
তিনি বলেন: খালেদা জিয়ার নির্দেশ ২০১৪ সালে তারা দেশজুড়ে প্রায় ৯ মাস ধরে অগ্নি সন্ত্রাস করেছে। স্কুল কলেজের বাচ্চারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে ভয় পেতো। বাসে পেট্রোল বোমা মেরে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করা হতো।
বিএনপি জাতায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের দেশ বাংলাদেশ বাঙলা ভাইয়ের দেশ বলে বর্হিঃবিশ্বে যে পরিচিতি পেয়েছিলো তা এখন আর নেই বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন: এই চট্টগ্রমে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে। এ অস্ত্রের ব্যবসা করতো কে? খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কালো টাকা সাদা করেছে। তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও কোক এবং সে সময়কার অর্থমন্ত্রীও কালো টাকা সাদা করেছে। এটা যেনো দেশের ইরিতহাসে বিরল এবং লজ্জার।
ওই জনসমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন: ভিক্ষুকের আর যাই থাকুক মর্যাদা নেই। বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মর্যাদাশীল দেশ, উন্নয়নশীল দেশ।
এসময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি তুলে ধরেন।
এর আগে, সকাল পৌনে ১১টায় হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নেভাল একাডেমিতে নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃতিসহ মোট ৪২টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও মোনাজাত শেষে মঞ্চ ওঠেন। মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে প্রধানমন্ত্রী জনতার অভিবাদন গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে পৌঁছানোর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় জনসভাস্থল পটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। দুপুরের পর থেকে জনসভাস্থল ছাপিয়ে আশপাশের সড়ক ও অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছে সাধারণ জনগণ।
Posted ৫:০৮ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২১ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta