কক্সবাংলা ডটকম(১০ জুন) :: দেশে ৫ মে’র মতো আর কোনও ঘটনা ঘটানোর সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। সেজন্য সংগঠনটির সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখতে চায় তারা। প্রয়োজনে এ সম্পর্কের উন্নতি বা অবনতি ঘটতে পারে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখোমুখি হলেও পাত্তা দেবে না ক্ষমতাসীনরা। এর বাইরে হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই, হবেও না। বরং আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত এভাবেই হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগ নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের সূত্রগুলো এমনটাই আভাস দিয়েছে।
সূত্রগুলো আরও জানায়, রাজনৈতিক কোনও সুবিধা দিয়ে হেফাজতকে যেমন শক্তিশালী করা হবে না, তেমনি অন্য কোনও রাজনৈতিক মহল তাদের ওপর ভর করে ফায়দা হাসিল করবে, সে সুযোগও দেওয়া হবে না।। হেফাজতকে নিয়ে এই নীতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।
হেফাজতের কাছ থেকে ভোটের সুবিধা পাবে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাতে সহযোগিতা করবে, এটা মনে করে না আওয়ামী লীগ। তবুও তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং নিষ্ক্রিয় করে রাখতে যা করা প্রয়োজন, সে পরিকল্পনা রয়েছে ক্ষমতাসীনদের। শুধুমাত্র ‘আন রেস্ট সিচুয়েশন’ (অস্থিরতা) যাতে আর তৈরি করতে না পারে, সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, ‘হেফাজতে ইসলাম আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে, এটা আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। ফলে ভোটের সুবিধা পাওয়ার জন্য হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক, এটা পুরোপুরি গুজব। তাদের সঙ্গে সম্পর্কের একমাত্র কারণ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি যাতে আর তারা তৈরি করতে না পারে।’
তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় আছে। সুতরাং অনেক ভালোমন্দ আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে হয়। এমন একটি চিন্তা থেকেই হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক।’
দলীয় নীতি-নির্ধারণী সূত্র জানিয়েছে, আবারও কিছু রাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতকে সামনে রেখে দেশে আরেকটি ‘৫ মে’ ঘটাতে তৎপর হয়ে উঠেছিল। আর এক্ষেত্রে ইস্যু করতে চেয়েছিল উচ্চ আদালত চত্বরের ভাস্কর্য। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এটা বুঝতে পারার পর, প্রধান বিচারপতির অনুমোদনেই ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়েছে। এখানে সরকার চেয়েছে- শুধু ‘আনরেস্ট সিচুয়েশন’(অস্থিরতা) যাতে না হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক মিডিয়ার তৈরি। তাদের সঙ্গে কোনও অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক আওয়ামী লীগের নেই।’
কওমি স্বীকৃতি ও ভাস্কর্য ইস্যুতে ফারুক খান বলেন, ‘কওমি স্বীকৃতি একটি যৌক্তিক ইস্যু। তাই এটি আমলে নিয়েছে সরকার। ভাস্কর্য অপসারণ হেফাজত দাবি করে আসছিল, প্রধান বিচারপতি তা অপসারণ করেছেন। এটা সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের প্রমাণ করে না।’
হেফাজতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সবার। সবকিছু মোকাবিলা করতে হয় সরকারকে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক নেই। কখনও হবেও না। তবে আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় দেশ পরিচালনা করায় কারও কোনও যৌক্তিক দাবি আমলে নিলে সেটা সম্পর্কের প্রমাণ করে না। আমাদের সঙ্গে হেফাজতের কখনও কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিলও না, ভবিষ্যতেও হবে না।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের কথা বাইরে শোনা যায়। দলের অভ্যন্তরে এমন কোনও আলোচনাই নেই। হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই, কখনও হবেও না। আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনা করছে। কোনও গোষ্ঠীর যৌক্তিক কোনও দাবি সরকার পক্ষ থেকে মেনে নেওয়ার মানে সম্পর্ক নয়। সরকার সবার জন্য।’
Posted ৩:৫৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta