মোঃ রেজাউল করিম,ঈদগাঁও(৮ মে) :: কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে চাষাবাদ নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া পেতে শুরু করেছে। ধান কাটা, ঝাড়া ও মাড়াইয়ে এখন আর বেগ পেতে হবেনা কৃষকদের।
চলমান লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতিতে নব এ প্রযুক্তি চলতি মৌসুমে কৃষক কৃষাণীদের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শ্রমিক সংকটে ও কৃষকরা স্বল্প সময় ও অর্থ ব্যয়ে বিপুল লাভবান হবেন। নতুন প্রযুক্তির নাম হচ্ছে কম্বাইন হারভেস্টর। এটি একটি অত্যাধুনিক ধান কাটা, ঝাড়া ও মাড়াই মেশিন। কৃষি মন্ত্রণালয় এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে শুক্রবার এটি সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় মেহের ঘোনা নূর কমিউনিটি সেন্টারের পশ্চিম পাশের খোরশেদ আলমের মালিকানাধীন জমির পাকা ধান কর্তন, ঝাড়া ও মাড়াই এর মাধ্যমে নতুন যন্ত্রটির সফল প্রয়োগ করা হয়।
এ উপলক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কক্সবাজার সদর উপজেলা কর্তৃক কৃষক মাঠ দিবস ও নমুনা শস্য কর্তন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ঝাকিয়া কাটা বিলে সকালে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজার এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কাশেম। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সরোয়ার তুষার, সদর উপজেলা সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এনামুল হক কাদেরী, ঈদগাঁও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় এম ইউ পি কামাল উদ্দিন, জালালাবাদ ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিকু দাস, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত স্থানীয় কৃষক রহিমুল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহবুবুল আলম মাবু, কৃষক সুরত আলম, মোহাম্মদ এরশাদ, ব্যবসায়ী আরিফ উল্লাহ, জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
উপস্থিত কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নব প্রবর্তিত এ টেকসই প্রযুক্তির মেশিনের দাম আঠাশ লক্ষ টাকা। কক্সবাজার সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ ১৪ লক্ষ টাকা দিয়ে মেশিনটি কৃষক রহিম উল্লাহ কে বিক্রি করেন। এখানে বাকি ১৪ লাখ টাকা সরকার ভর্তুকি দিয়েছেন। ক্রেতা রহিম মধ্যম মাইজ পাড়ার মৃত হাজী আব্দুল হকের পুত্র।
ঈদগাঁও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ মেশিনের মাধ্যমে ১ কানি জমির পাকা ধান কর্তন, ঝাড়া, মাড়াই ও বস্তাবন্দি করা যাবে। বস্তাবন্দি ধানগুলো কে কৃষককে বাড়িতে নিয়ে শুধু রোদে শুকাতে হবে। তার এছাড়া আর কোন কাজ নেই।
কৃষক রহিম উল্লাহ জানান, তিনি স্বল্পমূল্যে এ মেশিন দিয়ে স্থানীয় যে কোন কৃষকের ধান কর্তন, ঝাড়া ও মাড়াইয়ের কাজ করে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেষে কৃষি বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় নিবন্ধিত কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের উচ্চ ফলনশীল ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।
মানসম্পন্ন বীজ এর বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন’ এর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত চলতি আউশ মৌসুমের জন্য সরবরাহকৃত এ বীজের নাম আউশ ব্রি ধান ৪৮ । বীজগুলো সরকারের বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ও চুয়াডাঙ্গা জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার কর্তৃক প্রত্যায়িত। এতে প্রতি বস্তায় ১০ কেজি হারে ধানের বীজ রয়েছে। এ উপলক্ষে স্থানীয় কৃষক, জমি মালিক ছাড়াও নানা শ্রেণীর লোকজন অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৯:২৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ মে ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta