শহিদুল ইসলাম,উখিয়া((৯ ফেব্রুয়ারি) :: কক্সবাজারের কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পে রাতভর সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মাঝে চরম আতঙ্কে ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে এক রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অপর দুই রোহিঙ্গাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পে বিবদমান দুই রোহিঙ্গা গ্রুপের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা জানায়, শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২-৩ টার মধ্যে শ দেড়েক সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ১ নং ইস্ট ক্যাম্পে হামলা চালায়। সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী ওই ক্যাম্পের বি, সি ও ডি ব্লকের প্রায় প্রতিটি ঘরে তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর ও সাধারণ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের মারধর করে। এ সময় অনেক রোহিঙ্গা যুবক আত্মরক্ষার্থে ল্যাট্রিনের গর্তে লুকিয়ে ছিল বলে অনেক রোহিঙ্গা জানান।
সি ব্লকের রোহিঙ্গা নেতা কামাল জানান, সন্ত্রাসীরা অনেক ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে। পুরো ব্লকে নারী ও শিশুদের কান্নাকাটি, চিৎকারে চরম ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে দুই রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের এক ঘণ্টার তাণ্ডবে সাধারণ রোহিঙ্গারা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ে বলে জানা গেছে।
এ সময় সন্ত্রাসীরা এ-১৪ ব্লকের ছালেহ আহম্মদের ছেলে মো. খালেদ (২০), ডি-৯ নং ব্লকের মৌলভী মো. শরীফের ছেলে মো. আলী (২২) ও ডি ব্লকের নুর মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আয়াসকে (৩০) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কুতুপালং-১ ক্যাম্পের মৌলভী জাবের হোসেন জানান, ক্যাম্পে দিন দিন অসহনীয় পরিবেশের জন্ম হচ্ছে। এখানে সাধারণ রোহিঙ্গাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
কুতুপালং-১ ওয়েস্টের মাস্টার জবর মুল্লুক জানান, মিয়ানমারে এ ধরনের পরিস্থিতির মুখে রোহিঙ্গাদের পড়তে হয়নি। ক্যাম্পে সরকারের এত কড়াকড়ির পরও রাতে পুরো ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সবচেয়ে বেশি অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে নারী ও যুবকরা। অস্ত্রের মহড়া, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, খুন, গুম প্রভৃতি গুরুতর অপরাধের ঘটনা এখানে নিত্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কুতুপালং-১ ক্যাম্পের রোহিঙ্গা চেয়ারম্যান মো. রফিক বলেন, ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গারা কী পরিস্থিতির মুখে রয়েছে তা বলা কঠিন। চোখ, কান ও মুখ বন্ধ করে থাকা ছাড়া উপায় নেই বলে এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তিনি।
পুলিশ বলেছে, ৫-৬ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে রোহিঙ্গারা বলেছে, কমপক্ষে ১০-১২ রাউন্ড গুলি করেছে।
Posted ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta