কক্সবাংলা ডটকম(১২ সেপ্টেম্বর) :: পারল না পাকিস্তান (Pakistan)। এশিয়াসেরা শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। ঋণে জর্জরিত দেশ। পথে নেমেছে মানুষ। পালাবদল হয়েছে সেদেশের রাজনৈতিক মহলে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে দ্বীপরাষ্ট্র থেকে এশিয়া কাপ সরে যায়। মরুশহরে অনুষ্ঠিত হয় মেগা টুর্নামেন্ট।
এমন এক দুঃসহ পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার মানুষের মুখে হাসি ফোটালেন শানাকারা। ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপ (Asia Cup) ঘরে নিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। রাতটা আজ শানাকা, হাসারাঙ্গাদের। অন্যদিকে শুরুটা ভাল করেও পাকিস্তানকে হার স্বীকার করতে হল।
মহম্মদ রিজওয়ান এবং ইফতিকার কেবল লড়লেন। বাকিরা দাঁড়াতেই পারলেন না সেভাবে। শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে প্রমোদ মদুশন চারটি এবং হাসারাঙ্গা তিনটি উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। শেষ বার এশিয়া কাপ শ্রীলঙ্কা জেতে ২০১৪ সালে।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই হারতে হয়েছিল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। যদিও তারপর টানা পঞ্চম জয় ছিনিয়ে নিয়ে আজ এশিয়া কাপ চ্য়াম্পিয়ন হলো শ্রীলঙ্কা।
টস জিতে ফিল্ডিং নিলেই ম্যাচ জেতা যাবে বলে বিশ্বাস ছিল পাকিস্তানের। শ্রীলঙ্কা শিবির থেকে বলা হয়েছিল, তারা প্রথমে ব্যাট করতে প্রস্তুত। সেই কথা রেখেই বাজিমাত করল দাসুন শনাকার দল। ভেঙে দিল দুবাইয়ে টস জিতে ম্যাচ জেতার তথাকথিত মিথ। জয়ের জন্য ১৭০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান গুটিয়ে গেল ২০ ওভারে ১৪৭ রানেই। ৩২ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় পাকিস্তান। চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে বাবর আজম (৬ বলে ৫) ও ফখর জামান (১ বলে ০)-কে আউট করে ধাক্কা দিয়েছিলেন প্রমোদ মাদুশান লিয়ানাগামাগে। এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মহম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ। ১৩.২ ওভারে ৯৩ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ে পাকিস্তানের। মাদুশানই ভাঙেন এই জুটি, ইফতিখার করেন ৩১ বলে ৩২।
এই পরিস্থিতি থেকে ১৮.২ ওভারে পাকিস্তানের নবম উইকেট পড়ে, স্কোরবোর্ডে রান তখন ১২৫। মহম্মদ নওয়াজ ৬, খুশদিল শাহ ২, আসিফ আলি শূন্য, শাদাব খান ৮, নাসিম শাহ ৪ রান করেন। শেষ বলে হ্যারিস রউফ ৯ বলে ১৩ রান করে আউট হন। সপ্তদশ ওভারের প্রথম বলে মহম্মদ রিজওয়ান আউট হওয়ার পরেই ম্যাচ থেকে হারিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান। রিজওয়ান করেন ৪৯ বলে ৫৫। ১৭তম ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নেন ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা। প্রথম বলে রিজওয়ান, তৃতীয় বলে আসিফ আলি ও শেষ বলে খুশদিল শাহকে আউট করেন তিনি।
প্রমোদ মাদুশান ৩৪ রানের বিনিময়ে চার উইকেট নেন। হাসারঙ্গা ৪ ওভারে ২৭ রান খরচ করে তিন উইকেট দখল করেন। চামিকা করুণারত্নে নেন ২টি উইকেট। মাহিশ থিকশানা পেয়েছেন একটি উইকেট। এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান তোলে শ্রীলঙ্কা। ভানুকা রাজাপক্ষ ৪৫ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। হাসারঙ্গা ২১ বলে ৩৬ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন। ধনঞ্জয় ডি সিলভা করেন ২৮। হ্যারিস রউফ দখল করেন তিন উইকেট।
অর্থনীতি তলানিতে, দেশে কার্যত গৃহযুদ্ধ চলছে, ঘরের মাঠে যে টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিল তা হল বিদেশের মাঠে। প্রথম ম্যাচে হেরে এশিয়া কাপ অভিযান শুরু। তারপর একে একে বাংলাদেশ, ভারত, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে দুবার হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন। তাও ফাইনালে টস হেরে। অনবদ্য লড়াইয়ের কাব্য লিখল দাসুন শনাকার শ্রীলঙ্কা। অথচ আগামী মাসে টি ২০ বিশ্বকাপে মূলপর্বে ওঠার জন্য এই শ্রীলঙ্কাকেই যোগ্যতা অর্জন পর্ব খেলতে হবে। শ্রীলঙ্কা এর আগে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ১৯৮৬, ১৯৯৭, ২০০৪, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে। ১৯৮৬ ও ২০১৪ সালেও শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ জিতেছিল পাকিস্তানকে ফাইনালে হারিয়ে। শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপে রানার-আপ হয়েছে ১৯৮৪, ১৯৮৮, ১৯৯০-৯১, ১৯৯৫, ২০০০ ও ২০১০ সালে। অন্যদিকে, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাকে ২০০০ সালে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছিল, কিন্তু ১০ বছরের কাপ জয়ের খরা কাটাতে পারল না বাবর আজমের দল।
Posted ২:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta