বিশেষ প্রতিবেদক(১০ মে) :: কক্সবাজারের পেকুয়ায় ১৫টন ত্রাণের চাল চুরির ঘটনা মিডিয়ার মাধ্যমে ইতোমধ্যে সবার জানা। প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিম চাল চুরির ঘটনাটি তদন্ত করছে।
এ পর্যন্ত পেকুয়া ও চট্টগ্রামে ঘটনাটির সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। তবে ওই সাক্ষ্যগ্রহণের তদন্ত টিমের কাছে ধরা দেননি অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী।
এর আগে অবশ্যই তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বহিস্কারও করা হয়েছে। বহিস্কারের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। বহিস্কার করা হয়েছে আ’লীগে দলীয় পদ থেকে। তিনি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এদিকে চাল চুরির ঘটনার পর থেকে টইটং ইউপির চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক থাকলেও টইটংসহ উপজেলার আইনশৃংখলা অবনতি ও পরিবেশ অস্থিতিশীল সৃষ্টির পায়তারা শুরু করেছে বিএনপি-জামাতের অনুসারী বেশ কয়েকজন নেতা ও দাগী আসামীরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী পলাতক থাকার পর থেকে বিএনপির এক সময়ের প্রভাবশালী ব্যক্তি টইটং গুধিকাটা এলাকার মাহমদ মাঝি, বিএনপি নেতা মৃত মঞ্জুর মেম্বার ও জামাতের নেতা ডা.ফরিদুল আলম এক গোপন বৈঠকের আয়োজন করে। ওই বৈঠকে বেশ কয়েকজন আ’লীগে অনুপ্রবেশকারী লোক ও দাগী আসামী উপস্থিত ছিলেন। এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য চেয়ারম্যানের মুক্তি আন্দোলনের জন্য তারা প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করার সিদ্ধান্তও নেন।
ওই সিদ্ধান্তের আলোকে তারা গত কিছুদিন আগে রাতের আধারে টইটং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাহমদ মাঝি, মঞ্জুর মেম্বার ও ডা. ফরিদের নেতৃত্বে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে সামাজিক দুরত্ব বজয়া না রেখে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে। ১০ মিনিটি বিক্ষোভ চলাকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদল ফোর্স তাদেরকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
এর দুইদিন পর টইটংয়ের বনকাননে বিএনপি নেতা মাহমদ মাঝি ও আনোয়ার শুভের নেতৃত্বে একদল লোক রাতের আধারে মানববন্ধন করে চেয়ারম্যানের মুক্তি দাবী করে। চাল চুরিতে জড়িত লোকদের বিরুদ্ধে আধুনিক বাংলার রুপকার শেখ হাসিনা যেখানে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে সেখানে বিএনপি-জামাতের লোকজন পরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা করেছে।
এদিকে এঘটনা শেষ হতে না হতেই টইটংয়ের পন্ডিত পাড়ায় আবারো মানববন্ধন ও নাশকতার পরিকল্পনা করে। তাৎক্ষনিকভাবে পেকুয়া থানার এসআই সুমন সরকার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আরো জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী টইটং ইউনিয়ন আ’লীগের শীর্ষ নেতারা চাল চুরির ঘটনায় নিরবতা পালন করলেও বিএনপি-জামাতের নেতারা ছাড়াও বহু মামলার আসামীরাও চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে মাঠে নেমেছে। ইতোমধ্যে চেয়ারম্যানের মুক্তি আন্দোলনের জন্য দা-বাহিনীর সদস্যরা আবারো ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
দা-বাহিনীর প্রধান নাসির উদ্দিনের চাচা মোঃ কালু প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের মুক্তি দাবী করছেন। একই সাথে বিএনপি পরিবারের সন্তান আবদুল জলিল, আবদু রহিম ও সাইমন নামে এক ব্যক্তি চাল চুরির ঘটনায় চেয়ারম্যান নির্দোষ দাবী করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। কিন্তু ওই সমস্ত বৈঠকে আ’লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন না।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চাল চুরির ঘটনা এখন আইনি প্রক্রিয়া। এছাড়াও বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বললেও আন্দোলনের নামে তারা কোন ধরণের সামাজিক দুরত্ব মানছেনা। এছাড়াও যেখানে প্রধানমন্ত্রী চাল চুরির বিষয় নিয়ে খুব কঠোর সেখানে আন্দোলন নাশকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে টইটংয়ের সন্তান সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবাইদুল্লাহ লিটন বলেন, চাল চুরির বিষয়টি এখন আইনি বিষয়। সেই বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে চাইনা। তবে আন্দোলনের নামে যাতে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
টইটং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগ নেতা এম.শহিদুল্লাহ বিএ বলেন, সারাদেশে অসহায় মানুষের ত্রাণ চুরির বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কঠোর হস্তে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এখানে মনে রাখতে হবে, মহামারীর এ দিনে যাতে আমরা পেকুয়ার পরিবেশ খারাপ না করি।
Posted ৯:৩৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১০ মে ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta