রবিবার ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

১১ মাসে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে ১ লাখ ৩৬ হাজার নতুন রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
116 ভিউ
১১ মাসে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে ১ লাখ ৩৬ হাজার নতুন রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে গত ১১ মাসে আরো ১ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর মাসিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫১, অর্থাৎ গত এক মাসে নতুন করে ২ হাজার ৯৮৯ জন রোহিঙ্গা নিবন্ধিত হয়েছে।

৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ জনে।

ইউএনএইচসিআর জানায়, ২০২৪ সাল থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা এবং নির্যাতনের কারণে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন যার ফলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে নিরাপত্তা খুঁজছে।

প্রতিবেদন বলছে, রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে ২০২৪ সাল থেকে নতুন শরণার্থীরা বাংলাদেশে নিরাপত্তার সন্ধান অব্যাহত রেখেছে।

ফলস্বরূপ ২০২৪ সালের শেষের দিকে ক্যাম্পগুলোতে নতুন আগতদের সংখ্যা বাড়ার বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়েছিল।

তাদের বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ চলছে। শরণার্থীদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ নারী এবং শিশু, ১২ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ নারী এবং ৪৮ শতাংশ পুরুষ।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর শুরু করা গণহত্যা থেকে প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এর আগে ৯০-এর দশক থেকে মিয়ানমার সরকারের নির্যাতন থেকে বাঁচতে তিন লাখের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে অবস্থান করছিল।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষ যতই তীব্র হচ্ছে, ততই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে বিপর্যস্ত রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে ঢুকছে বাংলাদেশে সীমান্ত পেরিয়ে।

এক হিসাবে দেখা যায়, প্রতি মাসে গড়ে ছয় হাজারের মতো অনুপ্রবেশ ঘটছে। বর্তমান পরিস্থিতি আরো উদ্বেগজনক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সরকারি আট হাজার একর বনভূমিজুড়ে রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো।

অব্যাহত অনুপ্রবেশের কারণে সেখানে রোহিঙ্গাদের স্থান সংকুলান করা যাচ্ছে না। পরিবেশ ও প্রকৃতি বিনষ্টের পাশাপাশি এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হচ্ছে।

অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা বেড়ে যাওয়ায় এবং রোহিঙ্গা সহায়তা হ্রাস বা বন্ধ হয়ে গেলে দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্রের জেলা কক্সবাজার বহুমুখী সমস্যার সম্মুখীন হয়ে পড়বে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে।

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প তত্ত্বাবধানের সরকারি দায়িত্বে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের গত ১৩ জুলাইয়ের তথ্য বলছে, নোয়াখালীর ভাসানচরসহ কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯১টি পরিবারে মোট রোহিঙ্গা আছে ১১ লাখ ৪৩ হাজার ৯৬ জন।

ক্যাম্পগুলোয় প্রতি বছর জন্ম নিচ্ছে কম করে হলেও ৩০ হাজার শিশু।সেই হিসাবে দৈনিক গড়ে ৮২টি শিশু ভূমিষ্ঠ হচ্ছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। যার মধ্যে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ ৫ হাজার ৫২০ জন। পরিবার রয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ২৭৪টি।

আশ্রিতদের মধ্যে ৫২ শতাংশ শিশু, ৪৪ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ৪ শতাংশ বয়স্ক রয়েছে। যার মধ্যে ৪৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ শতাংশ নারী। আর প্রতিবছর ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে।

তথ্যানুযায়ী, ১৯৭৭-৭৮ সালে ২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে, যার মধ্যে ১ লাখ ৯০ হাজার মিয়ানমারে ফিরে যায়। এরপর ১৯৯১ সালে ২ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৭ জন অনুপ্রবেশ করে, যার মধ্যে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৯৯ জন মিয়ানমারে ফিরে যায়। ২০১২ থেকে ১৬ সাল পর্যন্ত ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে। তারপর ২০১৭ সালে ৮ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে। আর ২০২৪ সালে ৬৪ হাজার ৭১৮ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে স্থানীয় জনগোষ্ঠী রয়েছে ৫ লাখের কাছাকাছি। কিন্তু তার বিপরীতে রোহিঙ্গার সংখ্যা দ্বিগুণের কাছাকাছি।

সম্প্রতি প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের জন্য শনাক্ত করেছে মিয়ানমার। তাই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ট্রানজিট সেন্টার। নতুনভাবে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দুটি ট্রানজিট সেন্টার হস্তান্তর হচ্ছে শিগগিরই। টেকনাফ ও ঘুমধুমে আগে থেকেই প্রস্তুত আছে দুটি। আর প্রত্যাবাসনের জন্য সম্মত রোহিঙ্গাদের তালিকা হালনাগাদ করার কথা বলছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সাল থেকে নানা প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। কিন্তু নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি।

116 ভিউ

Posted ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

SunMonTueWedThuFriSat
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031 

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com