কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
গত বছরের মতো চলতি বছরেও বছরের প্রথম মাসে রোগীর সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে, তাতে কক্সবাজার জেলা হতে চলেছে ডেঙ্গুর হটস্পট।
আর কক্সবাজারে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থাপনা কঠিন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
তাদের কালচার আলাদা হওয়ায় এ ব্যাপারে কাজও সেভাবে করা যায় না। আর কক্সবাজারে বাংলাদেশিদের মধ্যে ডেঙ্গুতে শনাক্ত হয়েছেন ৪২৬ জন।
অর্থাৎ কক্সবাজারে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ঢাকার চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়, কারণ এ সময়ে শুরু হয় বর্ষাকাল। এই প্রাদুর্ভাব চলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ বছর মৌসুম শুরুর আগেই হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৭০৪ জন।
তবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর রোগীর সংখ্যা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিদিনকার তথ্যে অর্ন্তভুক্ত হয় না। প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত বা মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়, সেখানেও রোহিঙ্গাদের তথ্য থাকে না।
এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নাজমুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোহিঙ্গা কমিউনিটি যেহেতু আমাদের নাগরিক নয়, তাদের তথ্য আমরা একসঙ্গে আনি না।
তবে যেহেতু তারা আমাদের সঙ্গেই থাকে, জাতিসংঘও তাদের তথ্যটা চায়, সেহেতু গুরুত্ব দিয়েই আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করি এবং আলাদাভাবে হিসাব করি।
অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানে ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা ‘কঠিন’ । সেইসঙ্গে কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। সেখানকার স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ছড়ানো এই সংখ্যাটাও উপেক্ষা করার মত নয়।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় ওয়াসার পানি সঠিক ব্যবস্থাপনায় ধরে রাখা গেলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পানি সরবরাহের ব্যবস্থা খুব কম। ফলে তারা বিভিন্ন গর্ত থেকে পানি সংগ্রহ এবং অনেক সময় পানি খোলা পাত্রে রেখে দেয়।
এ ছাড়া তাদের সচেতনতার বিষয়টি আরও কম। যার কারণে সেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্যান্য এলাকার তুলনায় বেশি।
‘ঢাকায় জনগোষ্ঠী বেশি হলেও সেখানে জায়গা রয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জায়গা কম মানুষ বেশি। ফলে সেখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি।
এখন পর্যন্ত সেখানে এক হাজার ৬৬ জনের দেহে জ্বরটি শনাক্ত হয়েছে’, যোগ করেন নাজমুল ইসলাম।
Posted ১১:১৮ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ মে ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta