বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে মাদরাসায় সন্ত্রাসীদের হামলায় সাতজন নিহতের ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ. কে আব্দুল মোমেন বলেছেন রোহিঙ্গাদের মধ্যে যারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় না, তারা হয়তো এসব অঘটন ঘটাচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার পাশাপাশি আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন ক্যাম্পে মাদক ও অস্ত্র বাণিজ্য বন্ধে প্রয়োজনে গুলি ছুড়তে হবে।
শুক্রবার দুপুরে (২২ অক্টোবর) সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ক্যাম্পের বাইরে আইনশৃঙ্খলা আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, সে নিয়ে একটা বড় সভা গতকাল করেছি। এটা তো খুবই আতংকের বিষয়। অনেক লোক (মিয়ানমারে) ফেরত যেতে চায় না, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে। তারা হয়তো এসব অঘটন ঘটাচ্ছে। আমি ঠিক জানি না, জানতে হবে।’
মন্ত্রী আরও জানান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি বড় সভা হয়েছে।
মুহিবুল্লাহ হত্যা এবং আজকের ঘটনার পেছনে যোগসাজশ আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন জন বলছে, ওখানে ড্রাগের ব্যবসা হয়…আবার কেউ কেউ তথ্য দিয়েছেন কিছু উইপেন, কিছু বন্দুক-টন্দুকও আনা হয়। আমরা এসব নিয়ে কাল আলোচনা করেছি। আমার প্রস্তাব হলো, এই ড্রাগ ও অস্ত্র পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনে গুলি ছুড়তে হবে।’
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় হামলার ঘটনায় আট জন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা সবাই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় রয়েছে আরও আট থেকে নয় জন।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় এই হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১২ ব্লক-জে-৫ এর বাসিন্দা হাফেজ ও মাদ্রাসাশিক্ষক মো. ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-৯ ব্লক-১৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এইচ-৫২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমীন (৩২)।
এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন- ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এফ-২২ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মাদ্রাসাশিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪ এর রহিম উল্লাহর ছেলে মাদ্রাসাশিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫) এবং ক্যাম্প-১৮ ব্লক-এইস-৫২ এর নুর মোহাম্মদের ছেলে ও মাদ্রাসাছাত্র নুর কায়সার (১৫)।
Posted ৬:৩৮ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ অক্টোবর ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta