কক্সবাংলা রিপোর্ট(৩১ মার্চ) :: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যূষিত অঞ্চল উখিয়া ও টেকনাফের ১৩টি অস্থায়ী ক্যাম্পে অাশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিবন্ধন প্রায় ১২ লাখ। বিতাড়িত এই ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে পাহাড় ও সমতলে।আর ভৌগোলিক অবস্থান, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের হানাহানি এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে উখিয়া ও টেকনাফ এলাকার ৫টি স্পর্শকাতর জোন চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।
পূর্বদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি। দক্ষিণে ইয়াবা চোরাচালানের প্রধান রুট টেকনাফ,পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর রেখে মধ্যখানে ২৬১ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে উখিয়া উপজেলা।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও প্রশাসন থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো তথ্যানুযায়ী, উখিয়ার বালুখালী (২৫.৪৩ বর্গকিলোমিটার), জামতলী (২৩.৪০ বর্গ কি.মি), উনচিপ্রাং (২৯.৩৫ বর্গ কি.মি), মৌলভীবাজার (৩২.২৭ বর্গ কি.মি) এবং টেকনাফের শ্যামলাপুর (২২.৩২ বর্গ কি.মি) এলাকা নিয়ে এই স্পর্শকাতর জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব জোন আবার ২০টি পুলিশ ফাঁড়িতে ভাগ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, উখিয়ার কুতুপালং ও নোয়াপাড়ায় স্থাপিত পুরনো রোহিঙ্গা শিবিরে স্থায়ীভাবে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন রয়েছে। তবে স্পর্শকাতর নতুন এই ৫ জোনে পুলিশ ক্যাম্প না থাকায় অস্থায়ীভাবে রোহিঙ্গাদের মতো খুপড়িঘর তৈরি করে সেখানে কর্তব্য পালন করছে পুলিশ। আবার নিরাপত্তার প্রয়োজনের তুলনায় কমসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এসব এলাকায়, যা নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মানবতার খাতির দেখাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি পর্যটকরা প্রতিদিনই রহস্যজনকভাবে ঘুর ঘুর করছেন। ত্রাণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবা দিতে তৎপর এনজিওগুলো। এনজিও কার্যক্রমের নামে প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত করছেন ৮০০ থেকে ১২০০ বিদেশি।
কিন্তু গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তিন নোবেল বিজয়ী ছাড়া কোনো বিদেশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশের অনুমতি নেননি। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংগঠিত করার পুরনো অভিযোগ রয়েছে বিদেশি একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
পুলিশ বলছে, রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে ইতিপূর্বে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বা উগ্রবাদী কার্যক্রমের অভিযোগও রয়েছে। গত আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ইয়াবা সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করায় ইতোমধ্যে কয়েকটি খুনের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশের উখিয়া জোনের এএসপি চাই লো মারমা বলেন, রোহিঙ্গাদের খুপড়িঘরের মতো অস্থায়ী ক্যাম্প নির্মাণ করে নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পুলিশ এখনো দায়িত্ব পালন করছে। তবে আশার বিষয় হলোÑ এখানে পুলিশের জন্য স্থাপনা (ক্যাম্প) নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে সমস্যা সমাধান হবে।
তিনি বলেন, পুলিশ ক্যাম্প নির্মাণ শেষ হলে পুলিশ সদস্য দ্বিগুণ করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উখিয়ার নতুন-পুরনো ক্যাম্পগুলোয় ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার ঘনবসতি থাকায় এসব এলাকায় অগ্নিকা-, পাহাড়ধসসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সে অনুযায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ হবে।
Posted ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০১ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta