কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শিলখালি গ্রাম থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারীর ৫ তারিখে লাকিংমে চাকমাকে অপহরণ, বাল্য বিয়ে, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরিত করার প্রতিবাদে এবং তার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কক্সবাজার জেলার শাখা।
সোমবার সকাল ১১ টায় কক্সবাজার জেলা শহরের পৌরসভা কার্যালয়ের সামনের সড়কে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কক্সবাজার জেলার শাখার উদ্যোগে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ,আদিবাসী ফোরাম, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, হিউম্যান রাইটস্ ডিফেন্ডারস ফোরাম, নারী প্রগতি সংঘ, রাখাইন ওমেন ফোরাম, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, তঞগ্যা স্টুডেন্ট কাউন্সিল এই কর্মসূচির সংহতি প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কক্সবাজার জেলা শাখা সভাপতি, থৈন অং (বুবু)‘র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মংথেলা রাখাইন এর সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন,টেকনাফের শিলখালি গ্রামের হতদরিদ্র আদিবাসী ১৪ বছরের কিশোরী লাকিংমে চাকমাকে যারা অপহরণ,নির্যাতণ ও নির্মমভাবে হত্যা করেছে তারা পাষণ্ড ও হিংস্র। অপহরণকারী আতাউল্লাহ ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির পাশপাশি অপহরণ ও হত্যা মামলা পুনঃতদন্তের দাবি করা হয়। সেই সাথে কিশোরী লাকিংমে চাকমার মরদেহ বাবা-মার কাছে দ্রুত হস্তান্তর করার দাবী জানান।
উক্ত মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ ও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন,সহ-সভাপতি উদয় শংকর পাল মিঠু,সহ-সাধারণ সম্পাদক ডা: পরিমল দাশ,জেলা হিন্দু পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ, নারী প্রগতি সংঘের পারভীন,বাংলাদেশ জাসদ কক্সবাজার জেলার এ কে ফরিদ আহম্মদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, কক্সবাজার জেলা নারী বিষয় সম্পাদক মা টিন টিন,সাংগঠনিক সম্পাদক আলো চাকমা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদ, কক্সবাজার জেলার আহবায়ক অংথেন মারমা,তঞ্চঙ্গ্যা চাকমা ছাত্র পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি লাতু চাকমা,ব্লাস্ট এর তোহিদ প্রমুখ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলার সহ সম্পাদক চঞ্চল দাশগুপ্ত,স্বপন গুহ,জেলা আইনজীবি ঐক্য পরিষদ এর সদস্য সচিব এডভোকেট বাপ্পী শর্মা,জ্যােতি মল্লিক বাবু, মৃদুল মল্লিক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত,কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শিলখালি গ্রাম থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারীর ৫ তারিখে অপহরণ করা হয় হতদরিদ্র আদিবাসী ১৪ বছরের কিশোরী লাকিংমে চাকমাকে। তার পিতা লালাঅং চাকমা টেকনাফ থানায় কেস করতে ব্যর্থ হয়। কিন্ত কক্সবাজার নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা করতে সক্ষম হলেও একে দরিদ্রতা ও আবার নৃগোষ্ঠী এই দুই কারণে তার করা মামলার কোন অগ্রগতিই আর হয়নি।মাসের পর মাস ফাইল চাপায় কেটে যায় ১১টা মাস। আর দীর্ঘ ১১ মাস পর কেচিং চাকমা ও লালাঅং চাকমার আদরের মেয়ের সন্ধান পাওয়া যায় কক্সবাজারের হাসপাতালের মর্গে ।
এদিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গের হিমঘরে ২৬ দিন পড়ে থাকার পর অবশেষে বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে কিশোরী লাকিংমে চাকমার (১৫) মরদেহ। ৪ জানুয়ারী সোমবার বিকাল সোয়া ৩টায় মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর উপপরিদর্শক অর্জুন চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাকিংমের চাচাতো ভাই ক্যচিং চাকমা সই করে হাসপাতাল মর্গের হিমঘর থেকে লাকিংমে চাকমার মরদেহ গ্রহণ করেন।এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী।
Posted ৭:৩২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৪ জানুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta