কক্সবাংলা রিপোর্ট(২১ মে) :: মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নেয়া প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার দায়িত্ব একা বাংলাদেশের নয়। এ দায়িত্ব ভাগাভাগি করে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ইউরোপের দেশগুলোয় পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগীদের বাংলাদেশে অনুদান কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে জোর দিয়েছে বাংলাদেশ।
২১মে ঢাকার ইইউ রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠককালে এমন আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
ঢাকায় থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১০ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও ইইউ রাষ্ট্রদূত সংযুক্ত ছিলেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনসহ অন্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া নিয়ে রাষ্ট্রদূতদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া শুধু বাংলাদেশের একার দায়িত্ব নয়। এসব রোহিঙ্গার উন্নত জীবন ও জীবিকার জন্য এ বোঝা ভাগাভাগি করে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি ইউরোপের দেশগুলোয় অথবা কোনো তৃতীয় দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূতদের কাছে। প্রায় তিন বছর পার হয়েছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নিতে চাইলেও এখন পর্যন্ত একজনও যায়নি। মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আরো চাপ প্রয়োগে আহ্বান জানান ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের বলেন, ইইউ বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ের এবং বিশ্বাসযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার। তাদের কোনো বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে সরকারকে তা সরাসরি জিজ্ঞাসা করে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূতরা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য সরকার সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে রাষ্ট্রদূতদের আশ্বস্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূতদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রায় ৩৩টি টিভি চ্যানেল, কয়েকশ পত্রিকা এবং অসংখ্য অনলাইন বাংলাদেশে রয়েছে। যা অনেক দেশে, বিশেষ করে ইউরোপে নেই। ফলে এখানে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
বৈঠকে কভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপগুলো রাষ্ট্রদূতদের জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলোকে সাধুবাদ জানান রাষ্ট্রদূতরা। সেই সঙ্গে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তাদের দেশগুলো থেকে সহযোগিতার প্রস্তাব দেন।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে। যদিও অতীতে বিভিন্ন সময়ে আসা বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মোট সংখ্যা ১২ লাখেরও অনেক বেশি।
Posted ৩:১৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২২ মে ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta