কক্সবাংলা রিপোর্ট :: করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে কক্সবাজার জেলায় একের পর এক রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। সর্বশেষ চব্বিশ ঘন্টায় ৩২৪ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একইসাথে ৪ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে পুরো জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৮০ জন। এদের মধ্যে ৮৪ জনই কক্সবাজার সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১৪১ জন। জেলায় আক্রান্তের হার ২৫.৮৯%।
বুধবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব ও সদর হাসপাতালের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে তাদের করোনা শনাক্ত হয়।
রাতে কক্সবাংলাকে নিশ্চিত করে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস জানায় গত এক দিনে করোনায় ৩২৪ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার এ সংখ্যা ছিল রেকর্ড ৩২৬ হন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়,জেলায় করোনা আরও ৪ জনের মৃত্যূ হয়েছে।
তারা হলেন-উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের বাবুল চন্দ্র বড়ুয়া(৭৯)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ১৬ জুলাই মৃত্যূ ২৭ জুলাই।
চকরিয়া উপজেলার চিরিংগার রধু দে(৬৫)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২৭ জুলাই মৃত্যূ ২৬ জুলাই।
কক্সবাজার পৌরসভার নতুন ফিসারীঘাটের হাসিনা বেগম(৭০)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২৩ জুলাই মৃত্যূ ২৭ জুলাই।
উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের বাবুল চন্দ্র বড়ুয়া(৭৯)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ১৬ জুলাই মৃত্যূ ২৭ জুলাই। এবং
রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির নুরুল হুদা(৬৬)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ১৮ জুলাই মৃত্যূ ২৬ জুলাই।
সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩২৪ জন। তন্মধ্যে সদর উপজেলা ও পৌরসভার ৮২ জন,উখিয়া উপজেলায় ৫২ জন,টেকনাফ উপজেলায় ৯০ জন,রামু উপজেলায় ১৬ জন,পেকুয়া উপজেলায় ১৪ জন,মহেশখালি উপজেলায় ৪২ জন,চকরিয়া উপজেলায় ২১ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ৭ জন।
এছাড়া জেলায় ২৪ ঘন্টায় ১৮০টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৭৯জন পজিটিভ হয়েছেন।এর মধ্যে সদরে ১৯ জন,উখিয়ায় ৩ জন,টেকনাফে ১০ জন,চকরিয়ায় ১ জন,রামুতে ০ জন,পেকুয়ায় ৭ জন,মহেশখালিতে ১৪ জন,কুতুবদিয়ায় ৭ জন এবং উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ৩ জন ও টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ২ জন । এ পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৮৫৭টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১ হাজার ৫৭৫ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১ হাজার ৪৯৯ জন এবং রোহিঙ্গা ৭৬ জন।
২৮ জুলাই পর্যন্ত জেলায় করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৩ জনের।এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ২৪৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৭৮৬ জন। প্রতিষ্ঠানিক আইশোলেসনে রয়েছেন ৫৩৭ জন। মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৮০ জন। তার মধ্যে সদর ও পৌরসভার ৮৪ জন,উখিয়ায় ৪০ জন,টেকনাফে ১৭ জন,চকরিয়ায় ২০ জন,রামুতে ৮ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৩ জন এবং কুতুবদিয়ায় ৩ জন ।
২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনার্থী শিবিরের ১৩১টি টেস্টে পজিটিভ হয়েছে ১৪ জন। শরনার্থী শিবিরে এ পর্যন্ত ৫২ হাজার ৯৫৬ রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত‘র সংখ্যা ২ হাজার ৪৮২ জন।এর মধ্যে উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ২ হাজার ৪৫ জন এবং টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ৪২৮ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১১৯ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ২৩০ জন।মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ জন। আক্রান্তের হার ৪.৬৪%।
এদিকে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা চলালেও সংক্রমন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কোরবাণী ঈদের পর ২৪ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তা সত্তেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তবে করোনার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে রোগীর সংখ্যা কমানো তথা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে আরো বেশি করে গণসচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব এবং লকডাউন অর্থবহ করতে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশসানকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।
Posted ৪:৩৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta