কক্সবাংলা রিপোর্ট :: করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দ্বিতীয় দফার কঠোর লনডাউনের ৭ম দিনে এসেও শনাক্তের ডাবল সেঞ্চুরী দেখতে হল কক্সবাজার জেলাকে।গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও ২০১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একই সময়ে মৃ’ত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের। গত বুধবার ৪ জনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার আরও ৪ জনের মৃত্যূ হয়। এনিয়ে ৭২ ঘন্টাতেই ১১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হল। এনিয়ে পুরো জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৮৭ জন। এদের মধ্যে ৮৭ জনই কক্সবাজার সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা।
এদিকে অতিবৃস্টি ও বন্যার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট কম হওয়ায় জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমে ২০১ জন শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ২১৪ জন। জেলায় আক্রান্তের হার ২২.৪২%।
৩০ জুলাই শুক্রবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব ও সদর হাসপাতালের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে তাদের করোনা শনাক্ত হয়।
বিকালে কক্সবাংলাকে নিশ্চিত করে কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ২০১ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার এ সংখ্যা ছিল ২০২ জন। বুধবার ছিল ৩২৪ জন এবং মঙ্গলবার ছিল রেকর্ড ৩২৬ জন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়,২৪ ঘন্টায় জেলায় করোনা আরও ৩ জনের মৃত্যূ হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন রামু উপজেলার অন্যজন কক্সবাজার সদরের পৌর এলাকার।
তারা হলেন-কক্সবাজার পৌরসভার তারাবনিয়ারছড়ার রাশেদুল আলম(৬৯)।কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২০ জুলাই মৃত্যূ ২৯ জুলাই।
রামু উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নের মো: ইব্রাহিম(৪১)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ১২ জুলাই মৃত্যূ ২৮ জুলাই। এবং
রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালার মুফিজুল হক(৭৭)। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি ২০ জুলাই মৃত্যূ ২৮ জুলাই।
সিভিল সার্জন অফিস আরও জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২০১ জন। তন্মধ্যে সদর উপজেলা ও পৌরসভার ৬৬ জন,উখিয়া উপজেলায় ৪৫ জন,টেকনাফ উপজেলায় ৩৭ জন,রামু উপজেলায় ১২ জন,পেকুয়া উপজেলায় ৫ জন,মহেশখালি উপজেলায় ২২ জন,চকরিয়া উপজেলায় ৫ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায় ৯ জন।
এছাড়া জেলায় ২৪ ঘন্টায় ২২৪টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে ৬৭জন পজিটিভ হয়েছেন।এর মধ্যে সদরে ২২ জন,উখিয়ায় ১৪ জন,টেকনাফে ১ জন,চকরিয়ায় ৪ জন,রামুতে ৮ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৪ জন,কুতুবদিয়ায় ৯ জন এবং উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ০ জন ও টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ০ জন । এ পর্যন্ত জেলায় ৬ হাজার ৩৩০টি র্যাপিড এন্টিজেন টেস্টে করোনা পজিটিভ হয়েছেন ১ হাজার ৭২০ জন। এর মধ্যে স্থানীয় ১ হাজার ৬৪২ জন এবং রোহিঙ্গা ৭৮ জন।
৩০ জুলাই পর্যন্ত জেলায় করোনার পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৩৫৮ জনের।এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ৬৫১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ২০৫ জন। প্রতিষ্ঠানিক আইশোলেসনে রয়েছেন ৫১১ জন। মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ রোহিঙ্গাসহ ১৮৭ জন। তার মধ্যে সদর ও পৌরসভার ৮৭ জন,উখিয়ায় ৪০ জন,টেকনাফে ১৮ জন,চকরিয়ায় ২০ জন,রামুতে ১০ জন,পেকুয়ায় ৫ জন,মহেশখালিতে ৪ জন এবং কুতুবদিয়ায় ৩ জন ।
২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরনার্থী শিবিরের ১৩১টি টেস্টে পজিটিভ হয়েছে ১৬ জন। শরনার্থী শিবিরে এ পর্যন্ত ৫২ হাজার ৯৫৬ রোহিঙ্গার নমুনা পরীক্ষায় করোনাক্রান্ত‘র সংখ্যা ২ হাজার ৪৮২ জন।এর মধ্যে উখিয়া শরনার্থী শিবিরে ২ হাজার ৬৪ জন এবং টেকনাফ শরনার্থী শিবিরে ৪৪৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১১৯ জন। আইসোলেশনে রয়েছেন ২৩০ জন।মৃত্যূবরণ করেছেন ২৭ জন। আক্রান্তের হার ৪.৬৪%।
এদিকে জেলা প্রশাসন কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা চলালেও সংক্রমন কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। কোরবাণী ঈদের পর ২৪ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তা সত্তেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। তবে করোনার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে রোগীর সংখ্যা কমানো তথা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিয়ে আরো বেশি করে গণসচেতনতা তৈরির উপর গুরুত্ব এবং লকডাউন অর্থবহ করতে জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশসানকে আরো কঠোর ভূমিকা রাখার আহবান জানিয়েছে সচেতন মহল।
Posted ৭:৩৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩০ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta