সংবাদ বিজ্ঞপ্তি(২৮ জুন) :: কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফ করোনাভাইরাস এবং ঘূর্ণিঝড় আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ২৪ হাজার কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ বিতরণ করেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)।
এই উদ্যোগ দুটি বড় দুর্যোগে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এই দুর্যোগকালীন এই সময়ে তাদের জীবিকা রক্ষা করতে সহযোগিতা করবে।
২৮ জুন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
এ ব্যাপারে এফএও এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই ২৪ হাজার এরও বেশী কৃষকদের মাঝে এই বীজ বিতরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদনকারীরা করোনা মহামারী ও ঘূর্ণিঝড় এর কারণে অনেক খারাপ সময় পার করছেন।‘
”এফএও জানে যে এই জাতীয় ধাক্কা খাদ্য সুরক্ষা, বিশেষত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আমন মৌসুমে সময়মত কৃষকদের মাঝে উচ্চমানের ধানের বীজ সরবরাহ করার মাধ্যমে আমরা তাদের এই কঠিন সময় কাটাতে সহায়তা করছি এবং একই সাথে এটি সবার খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।”
ডিএই এবং এফএও কক্সবাজারে উখিয়া এবং টেকনাফ দুটি উপজেলা থেকে এই কৃষকদের বাছাই করেছে। স্থানীয় প্রশাসন, এবং ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিনিধিদের সহায়তায়, ডিএই এবং এফএও এর কর্মীরা প্রতিটি কৃষককে ১০ কেজি করে বীজ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে কৃষকদের সুরক্ষার জন্য ভীড় এড়াতে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও, এর পূর্বে কৃষক-মাঠ স্কুল সহ এফএও এর অন্যান্য কার্যক্রমের আওতাভুক্ত প্রায় ৭ হাজার এর মত স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করা হয়েছে। কানাডা এবং সুইডেন সরকার এই জরুরী উদ্যোগের জন্য অর্থায়ন করেছে।
”কৃষি যন্ত্রপাতি, বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ সহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান অংশীদার হিসেবে কক্সবাজারে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করে আসছে”, বলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম।
উখিয়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ”খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সব পতিত জমি চাষাবাদে আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার সাথে মিল রেখে সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক লক্ষ অর্জনের জন্য এই উদ্যোগ একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ”।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) থেকে ক্রয়কৃত উন্নতমানের ভিত্তি বীজ সংগ্রহ করার পর প্রয়োজনীয় পরীক্ষার মাধ্যমে এফএও এর বিশ্বমানের মান পূরণ করেছে কিনা তা নিশ্চিত কর হয়। এফএও এবং ডিএই কৃষকদের বীজ বপন থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত কৃষকদের দক্ষতা বিকাশ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করবে।
এফএওর হিসেব অনুসারে বিতরণকৃত বীজ প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা যাবে যা প্রায় ৩৭ হাজার টনের মত ধান উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট হবে যা এ অঞ্চলের গড় উৎপাদিত আমন ধানের ছয় ভাগের এক ভাগ।
কক্সবাজারে আনুমানিক ২ লাখ ৩৬ হাজার কৃষক পরিবার রয়েছে যারা ৩৯ হাজার ৩৯৮ হেক্টর জমিতে আবাদ করে। অঞ্চলটি চাহিদার চেয়ে বেশী খাদ্য উতপাদন করে, মূলত ধান উতপাদন কারণে। প্রায় ৭০% এর মত ধান-চাষি বর্ষা মৌসুমে আমন ধানের চাষ করেন।
এফএও এর সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা যায় কৃষকরা করোনা মহামারী এবং ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে উচ্চমানের বীজ কিনতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এরই কারণে এফএও এবং ডিএই এই ধানের বীজ বিতরণের উদ্যোগ বাস্তবায়িত করেছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে কক্সবাজারে কৃষি সরবরাহের ব্যবস্থা স্থিতিশীল ছিল, যদিও কৃষকরা বাজারে কৃষি পণ্য পরিবহন, শ্রম ঘাটতি এবং কৃষি পণ্যের সরবরাহের অপ্রতুলতা সহ বেশ কয়েকটি সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন।
Posted ১০:৫৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৮ জুন ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta