বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবির থেকে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মির’ (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহর ভাই শাহ আলীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তিনটি পৃথক মামলায় দুই দিন করে তাঁর মোট ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (উখিয়া) শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা এ আদেশ দেন।
কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে পুলিশের পক্ষে থেকে তিনটি মামলার বিপরীতে শাহ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিন করে মোট ২১ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। বিচারক মোট ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশ জানায়, ১৬ জানুয়ারি ভোরে উখিয়ার কুতুপালং ৬ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নৌকার মাঠসংলগ্ন এলাকা থেকে অস্ত্র, মাদক, টাকাসহ শাহ আলীকে গ্রেপ্তার করে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে এপিবিএনের সদস্যরা চোখ বাঁধা অবস্থায় অপহৃত এক রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার করে।
গ্রেপ্তার শাহ আলী (৫৫) মিয়ানমারের নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র সংগঠন ‘আরসা’ প্রধান আতাউল্লাহর ভাই। শাহ আলী চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজার এলাকার জয়নব কলোনীর ঠিকানায় ‘বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র’ সংগ্রহ করেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৬ জানুয়ারি উখিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি এবং অপহৃত যুবক বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। মামলাগুলোতে শাহ আলী, মোহাম্মদ জোবাইরসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।
মামলা তিনটি তদন্ত করছেন উখিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নুরে আলম। তিনি বলেন, মামলার তদন্তকাজ চলছে। শাহ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করবে পুলিশ।
প্রসঙ্গত,২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়। নতুন ও পুরোনো মিলে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছেন। গত দুই বছর ধরে রোহিঙ্গা শিবিরে স্বদেশে প্রত্যাবাসন নিয়ে অস্থিরতা,খুনোখুনি,মাদক পাচারসহ নানা অপরাধে আরসার জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার কুতুপালং লাম্বাশিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ মাস্টার। দেশ-বিদেশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সরব ছিলেন মুহিবুল্লাহ। এ জন্য প্রত্যাবাসন বিরোধী ও আরসার সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করেন বলে পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়। এরপর ক্যাম্পের ভেতরে একটি মাদ্রাসায় হামলা করে ছয় রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনায়ও আরসার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের তথ্য মতে, মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর এ পর্যন্ত তথাকথিত আরসা নামধারী ১১৬ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Posted ১২:০৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta