কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৬ জুন) :: গত ৬ জুন রেড জোন ঘোষনার পর থেকে কক্সবাজার জেলায় করোনা যেন ছুটছে ঝড়োহাওয়ার গতিতে।কঠোর লকডাউনেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ উপজেলায় নতুন করে শনাক্ত হলেন এক রোহিঙ্গা সহ ৮৩জন ।মাত্র আড়াই মাসে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৭শ ছুঁই ছুই।এ কারণে দেশের সর্বাধিক করোনাক্রান্ত ঢাকা,নারায়নগঞ্জ এবং চট্রগ্রামের পরই ৪র্থ স্থানে অবস্থান করছে কক্সবাজার জেলা।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সূত্র মতে,১৬জুন মঙ্গলবার পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৮৭ জন। এছাড়া মৃত্যূ হয়েছে ২৮ জনের। ক্রমবর্ধমান করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে কক্সবাজারবাসীকে চরম আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া কক্সবাংলাকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় দুটি পিসিআর ল্যাবে সর্বোচ্চ ৬১০টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এর মধ্যে ৯৬টি নমুনার ফল আসে পজিটিভ।এর সবই নতুন নমুনা। আর জেলায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে এক রোহিঙ্গা সহ সহ ৮৩ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে সদরের সর্বাধিক ৩৮ জন,রামুর-২,উখিয়ার-৮ জন,টেকনাফের-২২ জন,মহেশখালীর-৩ জন এবং কুতুবদিয়ায়-১ জন,পেকুয়ায়-৫ জন,চকরিয়ায়-৩ জন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১ জন । জেলার বাইরে বান্দরবানের ৮ জন,লোহাগাড়ার ৫জন নতুন পজিটিভ অছেন। বাকী ৫১৪টি নমুনা নেগেটিভ আসে।
এনিয়ে জেলায় ৭৬তম দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা দাড়াল মোট ১৬৮৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪১০জন।আর মারা গেছেন ২৮ জন। এছাড়া ৩৮ রোহিঙ্গা করোনায় আক্রান্ত ছাড়াও ২ জনের মৃত্যূ হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে,১৬জুন পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনার হটস্পট সদর উপজেলায় আক্রান্ত এবং মৃত্যূ সবচেয়ে বেশি। এখানে মোট আক্রান্ত‘র সংখ্যা ৭৭৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১০৪ জন। এছাড়াও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চকরিয়া উপজেলায় ২৬০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২৪ জন। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উখিয়া।এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২৪৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৬০জন। এর পরে রয়েছে রামুতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১২২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৭জন। পেকুয়ায় পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৭৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩৭জন।মহেশখালীতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৫৯ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩৬ জন। টেকনাফে পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১৩৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩০জন এবং কুতুবদিয়ায় পর্যন্ত আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১০ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ১৫ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের আইসোলেশন(নিভৃতবাস) ১১৬৭ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪১০ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে ৫ হাজার ৫০৮ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৪৮০ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন ।আর প্রাতষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনে অবস্থান করছেন ৮২৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮১১ জন। ১৬ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮ জন কভিড-১৯ রোগী।এর মধ্যে সদরে ১৭ জন,চকরিয়ায় ৩জন,টেকনাফে-৩ জন,উখিয়ায়-৩জন,কুতুবদিয়ায়-১জন এবং রামুতে ১ জন।
কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন (আরআরআরসি) কার্যালয়ের প্রধান স্বাস্থ্য সমন্বয়কারী ডা.আবু তোহা জানিয়েছেন,এ পর্যন্ত ৩৮ রোহিঙ্গা করোনা পজিটিভ হয়েছেন এবং ২ জন সুস্থ হয়েছে।এর মধ্যে মারা গেছেন ২জন। আর রোহিঙ্গা আইসোলেশন ইউনিটে ২৯ জন ভর্তি রয়েছেন।
Posted ১০:৪১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta