বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারে দুই বছরে ৩৩ রোহিঙ্গা ‘সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

সোমবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
135 ভিউ
কক্সবাজারে দুই বছরে ৩৩ রোহিঙ্গা ‘সন্ত্রাসী বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

কক্সবাংলা রিপোর্ট(১ সেপ্টেম্বর) :: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা অধ্যূষিত জনপদ উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গত দুই বছরে ৩৩ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়াও হত্যা, ডাকাতি, মাদক পাচার, অপহরণ, চাঁদাবাজী ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

প্রত্যেকটি ঘটনায়ই মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে জানিয়ে পুলিশ বলছে রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা মোকাবেলায় ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রোহিঙ্গাদের সংগঠনগুলোতে প্রশ্ন করা হলে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস বলেছে নিহতরা রোহিঙ্গা কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়৷ কারণ তারা নিহত হয়েছেন ক্যাম্পের বাইরে৷ তবে কিছু রোহিঙ্গা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলেও স্বীকার করেন রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস-এর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ উল্লাহ।

সর্বশেষ রবিবার ভোর রাতে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমুরা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন রোহিঙ্গা নূর মোহাম্মদ৷ গত ২২ আগস্ট যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার আসামি ছিলেন তিনি৷ টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের নেতা৷ তাকে আটকের পর ওই এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিল পুলিশ৷

এসময় তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিনি নিহত হয়৷ এই ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন৷ আর ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে৷’

অনুরূপ ঘটনায় গত ২৩ আগস্ট একই এলকায় ওমর ফারুক হত্যা মামলার আরো দুই আসামি রোহিঙ্গা শরনার্থী মোহাম্মদ শাহ ও মোহাম্মদ শুক্কুর পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। তাদেরও ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করে পুলিশ৷

রোহিঙ্গাদের ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘গত দুই বছরে ৩৩জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে৷’

তিনি বলেন, ‘নিহতরা হত্যা, ডাকাতি, মাদক পাচার, অপহরণ, চাঁদাবাজী ও মুক্তিপণ আদায়ের মত অপরাধে জড়িত ছিল৷ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার পর বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় তারা৷ প্রতিটি ঘটনায়ই মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে৷’

রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অপরাধ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে বেশ কিছু সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র গড়ে উঠছে৷ তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে৷ তারা ক্যাম্পে এবং আশেপাশের এলাকায় নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে৷’

গত দুই বছরে রোহিঙ্গাদের অপরাধের পরিসংখ্যান ঘেটে তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশের হিসাব অনুযায়ী, দুই বছরে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়া ছাড়াও নিজেদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বে আরো ৪৩ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী নিহত হয়েছেন৷

এ দুবছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চারশ’ ৭১টি মামলা হয়েছে৷ এসব মামলায় আসামির সংখ্যা এক হাজার ৮৮ জন৷ রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া মাদক অপরাধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো মাদক সংক্রান্ত মামলা৷ যার সংখ্যা দুইশ’৷

তিনি আরো জানান, মানব পাচারের অভিযোগে চারটি মামলাসহ অস্ত্র, ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা, নারী নির্যাতন, অপহরণ ও পুলিশের ওপর হামলার মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে৷

রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস-এর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ উল্লাহ গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ‘যারা ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছে তারা রোহিঙ্গা কি না আমরা জানিনা। তারা যে রোহিঙ্গা শরনার্থী এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। কারণ যারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে তাদের কেউ ক্যাম্পের বাসিন্দা নয়। তারা ডাকাত এবং সন্ত্রাসী। রোহিঙ্গারা শরণার্থী ক্যাম্পে থাকেন। ক্যাম্পের বাইরে কে কোথায় কি করে তা আমাদের জানা নেই।’

কিছু রোহিঙ্গা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে বলেও স্বীকার করেন সাঈদ উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘তবে কিছু রোহিঙ্গা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে৷ ক্যাম্পের মধ্যেও কিছু অপরাধের ঘটনা ঘটছে৷ এত মানুষ যেখানে থাকেন সেখানে কিছু অপরাধ হওয়াতো স্বাভাবিক৷’ তবে তাঁর দাবি, রাখাইনে থাকার সময়ের চেয়ে কক্সবাজারের ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা অনেক কম৷

কক্সবাজারের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাস্পে এখন সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট-এর পর থেকে এসেছে প্রায় আট লাখ। এসব ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নয়টি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ১১০০ পুলিশ সদস্য।

রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা মোকাবেলায় ক্যাম্পগুলোর চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন। এছাড়া অননুমোদিত মোবাইল সিম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি৷

135 ভিউ

Posted ১০:২৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com