কক্সবাংলা রিপোর্ট :: কক্সবাজার জেলায় আবারও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে করোনা। প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে বাড়ছে প্রাণহানি ও পজিটিভ শনাক্তের সংখ্যা। গত ৫ দিনে কোভিড-১৯ এ জেলায় এক রোহিঙ্গা সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে । এর মধ্যে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শাহজাহান(৬৭) ও অন্যজন ডিসি কলেজের অফিস সহকারী কহিউর আক্তার(২৮)।সর্বশেষ বুধবার এক রোহিঙ্গার মৃত্যূ হয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যাও দুই দিনের ব্যবধানে ৫গুন বেড়ে গেছে। কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে,কক্সবাজারে আবারও করোনায় প্রাণহানি ও পজিটিভ শনাক্ত বাড়ায় নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মাঝে।কক্সবাজারে ভাইরাসটির দাপট ফের বাড়ার কথা স্বীকার করলেন স্বাস্থ্যবিভাগ সংশ্লিষ্টরাও। তবে এর জন্য মাস্ক না পরা ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করাকেই দায়ী করছেন তারা। এ অব্স্থায় সর্বস্থরের মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতায় কোথাও কোন পদক্ষেপ বা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৪ঠা নভেম্ববর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৪৬৭টি করোনা টেস্টের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয় সদরের ১০জন সহ মোট ১৮ জন।মঙ্গলবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২১ জন।আর গত ২রা এপ্রিল থেকে জেলায় ৫১ হাজার ৮৬৯টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ২০৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৫৫০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫ জন।
বুধবার নতুন করে করোনায় আক্রান্তের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার-১০ জন,টেকনাফ উপজেলায়-৩ জন,রামু উপজেলায়-০ জন, চকরিয়া উপজেলায়-১জন,মহেশখালী-০ জন,পেকুয়া উপজেলায়-২ জন,উখিয়া উপজেলায়-০ জন,কুতুবদিয়া উপজেলায়-০ জন,বান্দরবান জেলায়-০ জন,বাশঁখালীতে-২ জন, লোহাগাড়ায়-০ জন, সাতকানিয়ায়-০জন এবং রোহিঙ্গা-০ জন।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
সূত্র থেকে আরও জানা যায়,বুধবার কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ পিসিআর ল্যাবে জেলার ৪০৬টি স্যাম্পল পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট ছিলো ১৬ জনের। বাদবাকি ৪০৬টি রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এই স্যাম্পলগুলো গত দুই দিনের সংগৃহীত। বুধবার সন্ধ্যায় এগুলোর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
সূত্র থেকে আরও জানা যায়,কক্সবাজারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা সদরের ৪৪জন সহ ৮১ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। সুস্থ এবং মৃতের সংখ্যা বাদ দিয়ে বাদবাকি ১৬১ জন বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
এছাড়া বুধবার(২৪ ঘন্টায়) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৪৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পরেনি। এনিয়ে মোট ১৪ হাজার ৬৩৩টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ৩৫০ জন রোহিঙ্গার করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে উখিয়ায় ২৬৫ জন এবং টেকনাফের ৭৭ জন।মৃত্যূ হয়েছে ১০ জনের এবং সুস্থ হয়েছে ২৩৭ জন। আর ৯২ জন বর্তমানে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
জেলা সিভিল সার্জন বলেন, এটি করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা বলা যাবে না। বর্তমানে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি অনুল্লেখযোগ্য পর্যায়ে। হয়তো ৩০% মানুষও যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানেন না, মাস্ক ব্যবহার করেন না। তাই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রকট হওয়ার সুযোগ পুরোদমে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ঘোষিত ‘নো মাস্ক- নো সার্ভিস’ এই স্লোগানের ভিত্তিতে আমরা কক্সবাজারে কিছু কাজ শুরু করেছি ইতোমধ্যে। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা লিফলেট তৈরি করছি। সেগুলো সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত এবং হাসপাতাল-ক্লিনিক ইত্যাদি স্থানে বিতরণ করবো। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রচারণা চালাবো।
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়টা আসলে আমাদের হাতে নেই। এটি পরিচালনার এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের।
Posted ৪:১২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ নভেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta