বিশেষ প্রতিবেদক :: ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছিল গত বছরের ৭ ডিসেম্বর।
আ এর এক মাস পর ৯ জানুয়ারী রোববার সকাল থেকে শুরু হয়েছে টানা চার দিনের যুক্তিতর্ক। সিনহা হত্যাকাণ্ডের পক্ষে-বিপক্ষে মামলার বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সব শেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চলছে সব শেষ এই যুক্তিতর্ক। আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মামলার ১৫ আসামির সাফাই সাক্ষ্য (ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আসামি পরীক্ষা) হয়েছে। এখন উভয় পক্ষে (বাদী-বিবাদী) চার দিনের যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে, শেষ হবে ১২ জানুয়ারি। আশা করছি, এ মাসের (জানুয়ারি) মাঝামাঝিতে সিনহা হত্যা মামলার রায় জানতে পারবেন দেশের মানুষ।’
আইনজীবীরা বলেন, আজ সকাল সোয়া ১০টার দিকে আদালতে শুরু হয় উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের পক্ষে লড়ছেন বিশিষ্ট আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত।
আর ১ নম্বর আসামি ও বাহারছড়া ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীর পক্ষে লড়ছেন চট্টগ্রাম আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী চন্দন শর্মা। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন পিপি ফরিদুল আলমসহ একাধিক আইনজীবী। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ মামলার ১৫ আসামি। সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে ১৫ আসামিকে আদালতে আনা হয়।
আইনজীবীরা বলেন, প্রথম দফায় গত ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত তিন দিনে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন দুজন। তাঁরা হলেন মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং ২ নম্বর সাক্ষী ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে গাড়িতে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাত। দ্বিতীয় দফার ৪ দিনে সাক্ষ্য নেওয়া হয় ৪ জনের, তৃতীয় দফার ৩ দিনে ৮ জনের, চতুর্থ দফার ২ দিনে ৬ জনের, পঞ্চম দফার ৩ দিনে ১৫ জনের, ষষ্ঠ দফার ৩ দিনে ২৪ জনের, সপ্তম দফার ৩ দিনে ৫ জনের এবং অষ্টম দফার ৩ দিনে ১ জনের (তদন্তকারী কর্মকর্তা) সাক্ষ্য নেওয়া হয়। নবম দফায় ১৫ জন আসামির সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি ও রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।
Posted ১১:৪০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta