মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া :: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচর স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্প থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে রোহিঙ্গাদের একটি বিশাল বহর। ১৫০০ জন রোহিঙ্গা ৩৮টি বাসে করে উখিয়া ছেড়েছে। চারটি বহরে বাসগুলো রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রামে নিয়ে যাচ্ছে।চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে করে তাদের ভাসানচর নেওয়া হবে।
৩৮টি বাস করে নোয়াখালী জেলার ভাসানচরের দিকে রওনা হন তারা।এছাড়াও রোহিঙ্গা মালবাহী অসংখ্য কর্ভারভ্যানও ছিল । ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে তাদেরকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সরকারের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র এই খবর নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে র্যাব-৭ ও র্যাব-১৫।
প্রতিটি বাসে থেকে ৬০ জনের মতো রোহিঙ্গা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কত রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নির্ভরযোগ্য কোনও এখনও পাওয়া যায়নি।
কিন্তু পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার জন্য যারা ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন কার্যত তাদেরকেই তালিকাভুক্ত করে রোহিঙ্গা পরিবারগুলোকে গত বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার ভোর সকাল থেকে ক্যাম্প থেকে নিয়ে এসে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে জড়ো করা হয়।
সেখান থেকে এ পর্যন্ত ১০টি বাস উখিয়া লিংক রোড় সড়ক হয়ে ভাসানচরে উদ্দেশে রওয়ানা দিলেও আরও ২০টির অধিক বাস সেখানে রয়েছে। ওই বাসগুলো রোহিঙ্গা ভর্তি করে যেকোন সময় তারাও রওনা দিতে পারেন। এরপর রোহিঙ্গাদের বাসে চট্টগ্রামের বোট ক্লাবে নেওয়া হয়। সেখান থেকে শুক্রবার জাহাজে তাদের ভাসানচরে নেওয়া হবে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘র্যাব ৭ ও র্যাব ১৫ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া র্যাব-৭ এর সদস্যরা বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। র্যাবের এয়ার উইং নজরদারি করছে।এছাড়া ‘স্পেশাল ফোর্স, বোম্ব স্কোয়াড এবং ডগ স্কোয়াডকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তারা দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অংশ নেবে।’
সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের অংশ হিসেবে ৫০০ পরিবারের প্রায় আড়াই হাজার রোহিঙ্গাকে এই দ্বীপে পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে গত ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৬৬ টন খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি সামগ্রী দ্বীপটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ভাসানচরের মোট আয়তন প্রায় ১৩ হাজার একর। এর মধ্যে প্রায় ছয় হাজার ৪২৭ একর ব্যবহারযোগ্য। এই আশ্রয়ণ প্রকল্প এক হাজার ৭০২ একর জুড়ে থাকলেও গুচ্ছ গ্রামগুলো প্রায় ৪৩২ একর জমির মধ্যে তৈরি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও নিপীড়নের মুখে দেশটি থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।ওই বছরের নভেম্বর মাসে কক্সবাজার থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার।
Posted ৩:৪২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta