বার্তা পরিবেশক(৩০ জানুয়ারি) :: কক্সবাজার শহরের বিআইডাব্লিউটিএ ঘাট থেকে ৯৫ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমাটিন পৌঁছাবে পুনরায় ৯৫ কিলোমিটার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার ফিরবে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। প্রতিদিন ১৯০ কিলোমিটার রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমনের সাথে মেতে উঠবেন ৫৮২ জন যাত্রী। এছাড়া জাহাজ থেকে সমুদ্র, পাহাড় আর সূর্যাস্ত দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।
৩০ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াই টায় ‘সমুদ্র যাত্রা’ অনুষ্ঠান উদ্বোধনের মাধ্যমে এই যাত্রা শুুরু হয়েছে। প্রথম সমুদ্র যাত্রা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হয়ে উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
এতে অতিথি ছিলেন, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের পরিচালক কমোডর ছৈয়দ আরিফুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আদেবুল ইসলাম, ট্যুরিষ্ট পুলিশের ওসি ফখরুল ইসলাম, কর্ণফুলী শীপ বিল্ডার্স এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিল জাহাজের দ্বার উন্মোচন, বঙ্গোপসাগরে বিচরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাখাইন নৃত্য ও মেজবান।
প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পর্যটন শিল্পকে উন্নত করতে হলে দেশের বিশাল জলরাশি তথা সমুদ্র, নদীকে ব্যবহার করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমুদ্র,নদী, লেক, ঝর্ণাকে ঘিরে। তাই আমাদের বিশাল সম্পদ রয়েছে সমুদ্র ও নদী। এই সম্পদের বহুমূখী ব্যবহারের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে ডেভেলপ করতে হবে। তিনি বলেন, কক্সবাজার শহর থেকে দীর্ঘ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যাত্রা পর্যটন শিল্পের জন্য এটি হবে মাইলফলক। এমন ভ্রমনে বিদেশী পর্যটকরাও আকৃষ্ট হবে।
উদ্বোধন এর পর ৩১ জানুয়ারী শুক্রবার থেকেই পর্যটকরা কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাগর পথে সেন্টমার্টিন ভ্রমন করতে পারবেন এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজের মাধ্যমে ।
এখন সরাসরি কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচলের কারনে পর্যটকরা নানা হয়রানি থেকে রেহায় পাবেন। কক্সবাজার থেকে সড়ক পথে টেকনাফ যাওয়া এবং সেখান থেকে জাহাজ করে সেন্টমার্টিন যাওয়ার বাড়তি ঝামেলা হতে রেহায় পাবেন ভ্রমণকারিরা।
জাহাজ টির কক্সবাজার এর পরিচালক ও ফারহান এক্সপ্রেস ট্যুরিজম এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক এম হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াাছরা (এয়ারপোর্ট রোড) বি আই ডবিøও টিএ ঘাট থেকে নিয়মিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমারটিন এর উদ্দেশ্যে নিয়মিত ছেড়ে যাবে জাহাজ টি। কক্সবাজার ঘাট থেকে ছাড়বে প্রতিদিন সকাল ৭টায় । সেন্টমারটিন থেকে ছাড়বে প্রতিদিন বিকাল ৩টায় । উভয় দিক থেকে গন্তব্যে পৌছুতে সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা । কিছুদিন পর সেন্টমারটিন থেকে ফেরার সময় আরো ১ ঘন্টা পেছানো হবে ।
এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ এর ইকোনমি আসনের (২য় শ্রেনী চেয়ার) ভাড়া জন প্রতি দুই হাজার টাকা । এছাড়া বিজনেস শ্রেণী আসন (১ম শ্রেনী চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৫শ’ টাকা। মোট ১৭ টি লাক্সারি ক্লাস কেবিন রয়েছে এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ এ। এদের মধ্যে ইকোনমি শ্রেণী কেবিন (২য় শ্রেনী) এর ভাড়া ১২ হাজার টাকা ও লাক্সারি ক্লাস (ভি আই পি) কেবিনের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা।
প্রতিটি কেবিন ২ জন এর জন্য প্রযোজ্য, অতিরিক্ত জন প্রতি আলাদা সাধারন টিকেট কেটে নিতে হবে । প্রতিটি টিকেট এর সাথে সৌজন্য মূলক নাস্তা অন্তভুক্ত আছে । আর ভাড়া হছে আপ – ডাউন বা আসা – যাওয়া সহ। কোন যাত্রী ভিন্ন তারিখে ফিরতে চাইলে তা টিকেট সংগ্রহ করার সময় উল্লেখ করতে হবে।
তিনি আরো জানান, প্রায় ৫৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রসস্থ জাহাজ টি তে মেইন প্রাপালেশন ইঞ্জিন হচ্ছে দুই টি । আমেরিকার বিখ্যাত কামিন্স ব্র্যান্ড এর এক একটির ক্ষমতা প্রায় ৬০০ বি এইচ পি করে। জাহাজটি ঘন্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। ১৭ টি ভিআইপি কেবিন সমৃদ্ধ। এই নৌযানে ভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ৫১০ টি আসন ব্যাবস্থা রয়েছে। রয়েছে প্রসস্থ কনফারেন্স হল রুম, ডাইনিং স্পেস, সী ভিউ ব্যালকনি।
উন্নত ও আধুনিক নেভিগেশন ব্যবস্থার জন্য রয়েছে, জিপি এস, ইকোসাউন্ডার, রাডার, কম্পাস । রয়েছে অগ্নি নির্বাপক ব্যাবস্থা । জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম লাইফ জ্যাকেট, লাইফ ক্রাফট, লাইফ বয়া এর পাশা পাশি রয়েছে ইমারজেন্সি লাইফ সেভিং বোট। দীর্ঘ দিন এ উপকূলীয় পথে অভিজ্ঞ মাস্টার ও ক্রু দ্বারা জাহাজ টি পরিচালনা করা হবে । জাহাজের যাত্রীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নিযুক্ত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে ।
Posted ৩:২০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta