বিশেষ প্রতিবেদক :: পর্যটননগরী কক্সবাজারে শৈশবের স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সেই ১৯৬১ সাল থেকে আমাদের কক্সবাজার যাওয়া-আসা। বাবা কারাগার থেকে বের হলেই আমরা কক্সবাজার ঘুরতে যেতাম। কক্সবাজার সৈকতের লাল কাঁকড়াগুলো সাংঘাতিক চালাক। কত যে চেষ্টা করতাম ধরার জন্য কিন্তু কোন সময়ে গর্তে ঢুকে যেত টেরই পেতাম না।
আজ বুধবার বেলা সোয়া ১১টায় কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) আইকনিক ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বহুমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দর কক্সবাজারের সঙ্গে বৈশ্বিক যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে কক্সবাজারের পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটনশিল্পের বিকাশ করতে হবে। দ্বীপাঞ্চলগুলোর পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমায় পর্যটনের ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে এই জায়গাটাকে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিতে যাচ্ছি। তা ছাড়া যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে, তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় সরকারের কাজ চলমান রয়েছে। এই বিমানবন্দর যখন সম্পন্ন হবে তখন পশ্চিমা দেশগুলো থেকে প্রাচ্যে যাতায়াতকারী বিমানগুলো এখান থেকে রিফুয়েলিং করার মাধ্যমে এটি একটি রিফুয়েলিং কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, রিফুয়েলিংয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে অগ্রাধিকার পায়। একসময় হংকং ছিল, এরপর থাইল্যান্ড অথবা সিঙ্গাপুর, এখন দুবাই। কিন্তু এখন কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশপথে রিফুয়েলিংয়ের একটা কেন্দ্র। পাশাপাশি এখানে তাঁর সরকার ক্রিকেট স্টেডিয়াম করেছে। ফুটবল স্টেডিয়াম করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খেলাধুলা আয়োজনের সব ধরনের ব্যবস্থা এখানে থাকবে। তা ছাড়া মেরিন ড্রাইভ, যেটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত করা হয়েছে, সেটা একেবারে চট্টগ্রাম পর্যন্ত করা হবে।
আষাঢ় মাসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের উপকূলজুড়ে ঝাউগাছ রোপণ করে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝাউগাছ সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি করবে, পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রক্ষাকবচের ভূমিকা পালন করবে।
মহেশখালীর মেগা-প্রকল্প ও রেললাইন কক্সবাজারের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, সমুদ্রসীমা বিজয় সুনীল অর্থনীতির বিকাশের জন্য মাইলফলক। এর সঠিক ব্যবহার করার আহ্বান জানান তিনি।
কক্সবাজার শহরের বাহারছড়াস্থ মুক্তিযোদ্ধা গোলচত্বর মাঠে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সচিব মো. শহীদুল্লা খন্দকার ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফোরকান আহমেদ বক্তব্য দেন।
সূত্র : তোফায়েল আহমদ,কালের কন্ঠ
Posted ৭:৫৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৮ মে ২০২২
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta