সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির বিজয় সরণীস্থ কক্সবাজার ইউনিট কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেছে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসীরা ওই কার্যালয়ের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
গত ৩১শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সন্ত্রাসীরা ওই সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিট।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়,বৃহস্পতিবারের সন্ত্রাসী ঘটনায় নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার শহরের বিমান বন্দর সড়কের আবু হেনা মোস্তফা কামাল, শাহীনুল হক মার্শাল, মোশারফ হোসেন দুলালসহ ২০ থেকে ২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী।
গত ৩১শে ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসির বরাবরে দাখিল করা এজাহার এ সব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারটির বাদী হয়েছেন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিটের সহকারি পরিচালক ও ইউনিট লেভেল কর্মকর্তা এ,কে,এম আজরু উদ্দিন সাফদার।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আগামী ৯ই জানুয়ারি ২০২১ সালে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিটের কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ পূর্ব ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত আছে। তৎপ্রেক্ষিতে ৩১শে ডিসেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিলো।
ওই দিন প্রতিদিনের মতো আমি কক্সবাজার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির নিজস্ব কার্যালয়ে দায়িত্বরত অবস্থায় সকাল আনুমানিক ১১টায় উল্লেখিত আসামীগণের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী মারাত্মক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একযোগে আমার কর্মস্থল রেডক্রিসেন্ট কার্যালয়ে।
অনাধিকার প্রবেশ করে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্বাচন বানচালের জন্য ত্রাসের রাজত্ব কায়েম পূর্বক অবৈধ অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে আমার কর্তব্যকাজে বাঁধা প্রদান করে। সন্ত্রাসীরা ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জনমনে আতংক সৃষ্টি করে কার্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করতে থাকে।
উক্ত সময় কার্যালয়ে কর্মরত উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম এগিয়ে আসলে দুই নং আসামী শাহীনুল হক মার্শাল জহিরুল ইসলামকে মারধর করতে থাকে। এক নং আসামী আবু হেনা মোস্তফা কামাল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে নির্বাচনী কোন কাজ না করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমার কর্তব্য কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে। ১নং আসামী আবু হেনা মোস্তফা কামাল অফিসিয়াল ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও আমার ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল টেবিল হতে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। তিন নং আসামী দুলাল কার্যালয়ে ব্যবহৃত সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটর বক্স ভাংচুর করে হার্ডডিস্ক নিয়ে নেয়।
ওইসময় গ্রামীণফোন কোম্পানীতে কর্মরত আমার সন্তান নবীন উদ্দিন সাফদার (২০) আমার কাছে আসলে আমার সন্তান পরিচয় পেয়ে ১ নং আসামীর নির্দেশে চার/পাঁচজন অজ্ঞাতনামা আসামী আমার ছেলেকে বেদড়ক মারধর করে। ওইসময় আসামীরা আমার ছেলের ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও ড্রোন+ক্যামেরা অনুমান মূল্য ২ লক্ষ টাকা। ১-৩ নং আসামীগণ সহ অজ্ঞাতনামা আসামীগণ অফিসের জিনিসপত্র ভাংচুর ও তছনছ করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে। আসামীগণ অফিসের মালামাল ও জিনিসপত্র ভাংচুর করে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন করে। ইতিমধ্যে ঘটনার সংবাদ পেয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশের একটি ফোর্স ঘটনাস্থলে আসলে আসামীগণ প্রকাশ্যে হুমকি দিয়া ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে পুলিশ অফিসের ব্যবহৃত ল্যাপটপ উদ্ধার করে দিলেও ল্যাপটপে সংরক্ষিত অফিসের যাবতীয় ডকুমেন্টস আসামীগণ নষ্ট করে ফেলে। উল্লেখ্য যে, ১নং আসামী ইতিপূর্বে আমাকে হুমকি দিলে আমি গত ২৭ অক্টোবর ২০২০ তারিখে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ১৪৬৬ নাম্বার সাধারণ ডায়েরী লিপিবদ্ধ করি।
আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পনা মতে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিট নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অফিসে অনাধিকার প্রবেশ করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম পূর্বক করে। তারা কর্তব্য কাজে বাঁধা দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। সন্ত্রাসীরা অফিসের মালামাল ভাংচুর, লুটপাট এবং মারধর করে বড় ধরণের জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করে।
বাদী রেডক্রিসেন্ট ইউনিটের সহকারী পরিচালক একেএম আজরু উদ্দিন সাফদার তার এজাহারে আরো উল্লেখ করেন সন্ত্রাসীদের হামলায় তিনিসহ আহত অন্যান্যরা ইউনিট কার্যালয়ে কর্মরত চিকিৎসকদের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ইউনিট কার্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। ঘটনার অনেক স্বাক্ষী আছে। স্বাক্ষীরা ঘটনা দেখেছে এবং জানে। ঘটনাটি বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নিদের্শনামতে আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। বাদী তার দাখিল করা এজাহারটিকে নিয়মিত মামলা হিসাবে রুজু করার জন্য আবেদন জানান।
Posted ১০:১২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ জানুয়ারি ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta