বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ির দরিয়ানগর পয়েন্টে ভেসে আসা দুইটি মৃত তিমির কঙ্কাল সংরক্ষণ করা হবে। শনিবার সকালে ভেসে আসা দ্বিতীয় তিমি মাছটির ওজন ছিল আনুমানিক ১০ টন। এটি লম্বায় ৪৬ ফুট ও প্রস্থে ১৮ ফুট।
শুক্রবার সকালে একই সৈকতে ভেসে আসা তিমিটি লম্বায় ছিল ৪৪ ফুট ও প্রস্থে ১৬ ফুট। সেটার ওজনও ছিল ১০ টনের মতো। সেটি রাতেই সৈকতের বালুচরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। ভেসে আসা দ্বিতীয় তিমিটি শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ বালুচরে পুঁতে ফেলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ায় তিমির শরীর দৃশ্যমান হয়েছে। সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা তিমির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ নির্ণয় করছেন।
ঘটনাস্থলে সামুদ্রিক সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, এই তিমির বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। ওজন আনুমানিক ১০ টন হবে। চামড়া পচে মাছটির শরীর বিকৃত হয়ে গেছে। মাথার অংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল।
এই তিমির আকার-আকৃতিও আগেরটার মতো। আগের তিমির পেটে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আর এটির পিঠে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটিও ১০ থেকে ১৫ দিন আগে মারা যেতে পারে। গভীর সমুদ্র থেকে জোয়ারের পানিতে ভেসে উপকূলে পৌঁছাতে এত দিন সময় লেগেছে। গতকালের তিমির চেয়ে এই তিমির শরীর পচে বেশি বিকৃত হয়ে গেছে। মুখ ও লেজের অংশ গলে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
মৎস্য গবেষকেরা বলছেন, আগেরটার মতো এই তিমির শরীর থেকেও নমুনা সংগ্রহ করে ময়নাতদন্ত করা হবে। তারপর বলা যাবে, তিমির মৃত্যুর কারণ কী।
এরআগে শুক্রবার কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসা মৃত তিমিটি গভীর রাতে বালুচরে পুঁতে ফেলা হয়েছে। তবে দুই মাস পর ওই জায়গা থেকে তিমির কঙ্কাল সংগ্রহ করে গবেষণার জন্য সংরক্ষণ করা হবে। তত দিন যেখানে মৃত তিমি পুঁতে ফেলা হয়েছে, সেটা দেখভাল করবে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগ ও সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্র। আড়াই টন ওজনের নীল তিমিটির শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। শুক্রবার সকালে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে অন্তত ৪০ ফুট লম্বা এই তিমি। এর শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক আরও বলেন, অন্তত ১০ থেকে ১৫ দিন আগে তিমিটির মৃত্যু হতে পারে। এটি নীল তিমি। এ তিমির দাঁত থাকে না।শুক্রবার রাতে মৃত তিমির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে এলে বলা যাবে, তিমির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (প্রশাসন) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, শুক্রবার সকালে সৈকতের হিমছড়ি এলাকায় যে তিমিটি ভেসে এসেছিল, নতুন ভেসে আসা শনিবারের তিমিটির আকারও একই রকম। জোয়ারের পানি নেমে গেলে ময়নাতদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সন্ধ্যার দিকে এটি সৈকতের বালুচরে পুঁতে ফেলা হবে। মৃত তিমির শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
সূত্র : প্রথম আলো ।
Posted ৮:৫৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta