কামাল শিশির,রামু(১০ ফেব্রুয়ারি) :: কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে ডিবি পরিচয়ে ছিনতাইকালে পুলিশ বিশ্বখ্যাত এনজিও ব্রাকের মনোগ্রাম লাগানো জ্যাকেট (কুটি) পরিহিত দুই গাড়ি চালক সহ ৪ জনকে আটক করেছে। সেই সাথে পুলিশ জব্দ করেছে ভাড়ায় চালিত ব্রাকের ২ টি মাইক্রোবাসও। গাড়ি থেকে একটি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার দিবাগত রাতে হিমছড়ি ফাঁড়ির পুলিশ তাদের আটক করে।
রোহিঙ্গা শিবিরে মানবতার সেবায় নিয়োজিত এনজিও’র জ্যাকেট গায়ে দিয়ে ছিনতাই কাজে জড়িত থাকার ঘটনায় এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, রোহিঙ্গা শিবিরের এনজিও গুলোর কর্মীরা স্ব স্ব প্রতিষ্টানের লোগো সম্বলিত জ্যাকেট পরিধান করে থাকে।
এসবের অনেকগুলোর সাথে স্থানীয় আইন শৃংখলা রক্ষাকারি সংস্থার সদস্যদের জ্যাকেটের সাদৃশ্য রয়েছে। এ কারনে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছে। তাই অবিলম্বে এনজিওগুলোর জ্যাকেট নিষিদ্ধ করারও দাবি উঠেছে।
ঘটনার বিষয়টি নিয়ে ব্র্যাকের পক্ষে সংস্থাটির কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান বিপ্লব মুস্তাফিজ জানিয়েছেন-‘ আমরা পুলিশের কাছে জানতে পেরেছি ব্র্যাকের জ্যাকেট পরিহিত গাড়ি চালকের হাতেনাতে আটকের ঘটনাটি। বাস্তবে আমাদের সংস্থার ভাড়ায় চালিত গাড়ির চালকরাই এ ঘটনার সাথে জড়িত। তারা (গাড়ি চালকদ্বয়) ব্র্যাকের নিয়মিত কোন চাকুরিজীবী নন। তাদের অপরাধের সাথে ব্র্যাক কোন ভাবেই জড়িত নয়।’
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, দিনের বেলায় এনজিও’র ডিউটির পর রাতের বেলায় এসব গাড়ী চালকরা বেরিয়ে পড়ে ছিনতাই কাজে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কটিই হচ্ছে ছিনতাইয়ের অন্যতম স্থান। রবিবার গভীর রাতে মেরিন ড্রাইভের হিমছড়ি এলাকায় একের পর এক গাড়ির যাত্রীদের ছিনতাইয়ের খবর পেয়ে পুলিশ কেবল একটি দলের ৪ সদস্যকে আটক করতে সমর্থ হয়েছে। এরকম ছিনতাই কাজে জড়িত রয়েছে আরো একাধিক দলের সদস্যরা।
সাগর পাড়ের হিমছড়ি ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, আটক ছিনতাইকারিরা হচ্ছেন যথাক্রমে চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার উত্তর কলাউজান গ্রামের রাখাল দালের পুত্র শিবু দাশ ওরফে শুভ (৩৮), চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুর্ব ছালিয়া পাড়া, জংগলনাপুরের মীর কাশেমের পুত্র এরশাদ (৩৩), কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়ার ইমরান হোসেন (২০) ও ঈদগাঁও পশ্চিম গজালিয়া গ্রামের শের আলীর পুত্র আলমগীর (১৯)।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান, গাড়ি চালক শিবু দাশ গায়ে পরিহিত জ্যাকেটে ব্র্যাকের লোগো’তে টেপ লাগিয়ে দিয়ে নিজেকে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ছিনতাই কাজে নেতৃত্ব দেন। অপর তিনজন হন তার সহযোগি। একের পর এক একটি যাত্রীবাহী গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয় শিবুর দলটি।
পরে হিমছড়ি থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে তাদের সবাইকে আটক করে। পুুলিশ এসময় উদ্ধার করে ছিনতাইয়ের কবলে পড়া সিএনজি টেক্সী চালক মমতাজ মিয়াকে। কক্সবাজার ডিবি পুলিশের অফিসে আটক অপর গাড়ি চালক এরশাদ অকপটে পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়ে জানান, তাদের দলটি রবিবারের অভিযানে নগদ ৭০ হাজার ৮০০ টাকা ছিনতাই করে। এর আগেও তারা অনেকবার ছিনতাই কাজে অংশ নেয়।
Posted ৪:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta