কক্সবাংলা ডটকম(৩১ জুলাই) :: করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শাটডাউন হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চলমান কঠোরতম বিধিনিষেধ শেষ হচ্ছে ৫ আগস্ট। এরপর কী হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। তবে খোঁজা হচ্ছে সব ধরনের বিকল্প।
সংক্রমণ, জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি বিবেচনায় রেখে বুধবারের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
শনিবার ফোনে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এর মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নেব পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৫ তারিখের পর কী হবে। ৩/৪ তারিখে আমরা জানিয়ে দেবো, আমরা কী করতে যাচ্ছি। কী পরিসরে খুলবে অথবা কী হবে, সে বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত জানাবেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
সরকার সম্ভাব্য সব বিকল্প মাথায় রেখে করণীয় নির্ধারণ করতে চায় বলেও জানান তিনি।
ফরহাদ বলেন, ‘পরিস্থিতি বুঝে যতগুলো বিকল্প আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবা হচ্ছে…হয়তো অফিস খোলা রাখলে, সেখানে আমাদের লোকবল কত থাকবে, সেটির একটি ব্যাপার আছে। মানুষ যাতে ঘর থেকে কম বের হয়, সে জন্য কী করা যায়, যতগুলো বিকল্প আছে, আমরা সেই বিকল্পগুলো নিয়ে ভাবছি।’
মাঝে গুঞ্জন উঠেছিল, ৫ আগস্টের পর আর শাটডাউন থাকেছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে উদ্ধৃত করে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, ৫ আগস্টের পর আর শাটডাউন থাকছে না। যদিও মন্ত্রী এমন কোনো কথা বলেননি বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা কী পরিসরে থাকবে…হয়তো একবারে সব ওপেন হবে না। আসলে কী পরিসরে হবে, ৩/৪ তারিখে আমরা জানাতে পারব। আসলে কী হবে সেই সিদ্ধান্তটা নিচ্ছি আমরা। এখনও বলতে পারছি না। সেটা আমাদের বলাও ঠিক হবে না।’
৫ আগস্টের পর আরও ১০ দিন শাটডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেটিও আমাদের মাথায় আছে। আমাদের বিবেচনার মধ্যে আছে। কারণ সবকিছুর সমন্বয় আমাদের করতে হবে। সে জন্য আমি বলছি, আমরা একটু সময় নেব। ৩ বা ৪ তারিখে আমরা বিষয়টি পরিষ্কার করে দেব।’
কীভাবে কী করা হবে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এখনও সিদ্ধান্ত দেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আরও মিটিং করব। (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের) ডিজি অফিসের পরামর্শ আছে। সেটাও দেখব।
‘সবকিছু মিলিয়ে ৩/৪ তারিখে বলতে পারব আসলে কী। এই মুহূর্তে স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। কারণ সিদ্ধান্ত আসবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে।’
তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণকে সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব আছে। সেগুলো বিবেচনা করে কীভাবে করলে এই সংক্রমণ কমাতে পারি, নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেটি আমাদের মূল লক্ষ্য। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা এবং কাজকর্ম যেগুলো অপরিহার্য, সেগুলো চলমান রাখা। কী করলে ভালো হবে সে জন্য আরেকটু সময় আমাদের লাগবে।’
এদিকে রোববার থেকে বিদেশি ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহের সুবিধার্থে রপ্তানিমুখী শিল্প খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেছেন, এ সিদ্ধান্তে করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
সরকারের এমন ঘোষণার পর থেকে ফেরিঘাটে প্রচণ্ড ভিড়। বলা হচ্ছে, তারা কাজে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরছেন। তৈরি হচ্ছে সংক্রমণ ঝুঁকি।
বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (বিজিএমইএ) সঙ্গে যখন আমাদের মিটিং হয়েছে, তখনও তারা কথা দিয়েছে যে, যারা ঢাকায় আছে শুধু তাদেরকে দিয়ে তারা কর্মকাণ্ড শুরু করবে; কেউ চাকরি হারাবে না। ৫ তারিখের পর পর্যায়ক্রমে তারা তাদেরকে নিয়ে আসবে। সেটাও একবারে না, পর্যায়ক্রমে। কারও কোনো ছাঁটাই বা এ ধরনের কোনো আশঙ্কা নেই।’
তিনি বলেন, ‘তারা (ব্যবসায়ীরা) এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যারা শুধুমাত্র ঢাকাতে আছেন, তাদের নিয়ে কল-কারখানাগুলো শুরু করা উচিত এ জন্য যে, বিদেশি যে অর্ডারগুলো আছে, বায়ারদের যে অর্ডারগুলো আছে, সেগুলা যথাসময়ে তাদেরকে দিতে হবে। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, কারও আতঙ্কিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কেউ ছাঁটাই হবে না।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কোরবানির ঈদের পর ২৩ জুলাই সকাল থেকে শাটডাউন দেয় সরকার। এটি চলবে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে এর মধ্যেই শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, রোববার থেকে চালু হবে পোশাকসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা।
Posted ৩:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta