মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া :: নব্বই”তে পা দিয়েছে কানু চাকমা। জোয়ান থাকতে সেই পাহাড়ের চুড়া থেকে কলা কচুসহ নানা সবজি কাঁধে ভর করতো।
পাহাড় থেকে নানা উৎপাদিত পণ্য বাজারে সরবরাহ করে মানুষের চাহিদা পুরণ করতো। জীবিকার তাগিদে পাহাড়ের গভীর জঙ্গল থেকে ফলমুল কুড়িয়ে নেওয়াই পরিবারে একমাত্র উপায় ছিল। সংসারে ভরনপোষণে কোনদিন কুন্ঠাবোধ করেনি।
এখন সেই অাগের বয়স নেই। কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। বয়স ৯০তে পা রেখেছে। হাত থরথর করে কাঁপছে। এখন সম্বল বলতে হাতের লাঠিটিই একমাত্র ভরসা। কোন রকমে লাঠির ভর করে আসা এই কানু চাকমার জীবন শেষ প্রান্তে। তার সাথে কথা কথায় এসব পুরানো দিনের কথা গুলো অকপটে বলছিলেন চট্রগ্রামের পাহাড়ি আঞ্চলিক ভাষায়।
উখিয়া সীমান্তের পুর্বাঞ্চলীয় জনপদ নাইক্ষংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার কানু চাকমার বাচাঁর জন্যে এখন শেষ উপায় ভিক্ষাবৃত্তি!
ভাল করে কথা বলতে পারেনা বয়সের ভারে ন্যুয়েপড়া শারিরীক অবস্থাও তেমন ভাল নেই।
উখিয়া ষ্টেশনে ৩ এপ্রিল শনিবার বেলা বেড়ে প্রখর রোদ। দোকানে দোকানে হাতপেতে বলছিল মরে হউয়া টিয়াদে। অর্থাৎ কয়টা টাকা দে। নজরে আসলে এগিয়ে জিজ্ঞেস করে স্থানীয় গনমাধ্যম কর্মীরা। অন্যরা শুনছিল আক্ষেপ।
একদা গরু ছাগল জুম চাষ সবই ছিল। অভাব কোদিন দরজায় কড়া নাড়েনি। পর্যায়ক্রমে সব শেষ। বয়সও শেষপ্রান্তে। হালধরার কেউ নেই। নি:সন্তান কানুর চোখে পানি, শারীরিক দুুর্বলতা ও মনের বেদনায় রীতিমত ক`ফোটা চোখের জল গড়িয়ে পড়তে দেখলাম।
এক সময় বয়স্কভাতা পেত। কিন্তু এখন তা আর পায়না। চাউলের কার্ড ও একই অবস্থা ! মেম্বাররা নাকি টাকা ছাড়া দেয়না। চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজের নাম জানে। মেম্বারের কথা জিজ্ঞেস করলে ক্ষোভের সাথে উত্তর দেয়। টিয়াখোর (টাকা খায়)।
সমাজের অপেক্ষাকৃত শারিরীক দুর্বল মানুষ গুলোর অবস্হা, এই যদি হয় স্বাধীনতার ৫০বছরের চিত্র! তাহলে বলতে বাধা নেইতো ? জীবন যুদ্ধে রক্তেঝরা এই বাংলায়, আমরা কি পেয়েছি, চেয়েছি কি ? এ লজ্জা কার ?
প্রশাসন মহোদয়, এ কানু চাকমাদের মত শত বয়োবৃদ্ধ অক্ষমদের খুজে বের করে অকৃপণ হাতকে প্রশস্থ করুণ।
Posted ৫:২২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ এপ্রিল ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta