বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ২৭শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

করোনা পরবর্তী ৮ চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের অর্থনীতি

শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১
209 ভিউ
করোনা পরবর্তী ৮ চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের অর্থনীতি

কক্সবাংলা ডটকম :: করোনা সংক্রমণে ১৫ মাস ধরে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের সামগ্রিক কার্যক্রম। এতে চলতি অর্থবছরেই কমপক্ষে আট ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে সরবরাহ চেইনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে বেড়ে যেতে পারে বিভিন্ন পণ্যের দাম।

ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আর টাকার প্রবাহ ও পণ্যের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে। পাশাপাশি বাড়তে পারে দেশে-বিদেশে ঋণের সুদের হার। তাই স্বাভাবিক কারণেই বৃদ্ধি পাবে বৈদেশিক দেনার পরিমাণ। এছাড়া কমতে পারে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধির হার।

গত বৃহস্পতিবার ঘোষিত চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে এসব আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে বেশকিছু সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে- সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ কমতে পারে। বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ফলে আমদানি ব্যয় মেটানোর সক্ষমতা আরও বেড়ে যাবে। করোনা-পরবর্তীকালে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে দেশের অর্থনীতির পালেও হাওয়া লাগবে।

মুদ্রানীতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিচালক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে এগোতে হবে। বাড়াতে হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সক্ষমতা।

মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষ্যে লিখিত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ‘বর্তমানে আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি যখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে আতঙ্কময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।’

মুদ্রানীতিতে বলা হয়, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বেশির ভাগ দেশের বেশির ভাগ মানুষ টিকার আওতায় আসবে-এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছে আইএমএফ। ইউরোপ, আমেরিকাসহ অনেক দেশ করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড খুলে দিচ্ছে। ফলে ১৫ মাসের মন্দার পর হঠাৎ করে চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশগুলো ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগ্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে বাড়ছে এর দাম। এর সঙ্গে সমন্বয় রেখে অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়তে শুরু করেছে।

বিশেষ করে শিল্পের কাঁচামাল, তুলা, পাম অয়েলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এসব পণ্য আমদানির সঙ্গে বাংলাদেশ বিদেশ থেকে মূল্যস্ফীতি আমদানি করবে। যা দেশের মূল্যস্ফীতির হারকে চাপে ফেলবে।

চাহিদা বাড়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক ৯০ থেকে বেড়ে ১২৪ দশমিক ৬ পয়েন্টে উঠতে পারে। খাদ্যপণ্যের মূল্য বাড়ার কারণেই এমনটি হতে পারে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় সব ধরনের জ্বালানির চাহিদাও বেড়েছে। বাড়তে শুরু করেছে এগুলোর দাম। ৩০ থেকে এর সূচক বেড়ে ১১৪ দশমিক ১ পয়েন্টে উঠতে পারে আগামী জুনের মধ্যে।

চাহিদা বাড়ার কারণে অর্থের প্রবাহের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। এতে বৈশ্বিক সুদের হার বেড়ে যাবে। তখন চড়া সুদে ঋণ দিতে হবে। এতে একদিকে পণ্যের খরচ বাড়বে। মূল্যস্ফীতিতে চাপ তৈরি হবে। বেড়ে যাবে বৈদেশিক দায়ের পরিমাণ।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে ঋণের সুদের হার বেশি বলে অনেক উদ্যোক্তা বিদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছেন। বিদেশি ঋণের সুদ হার বাড়লে তখন দেশি ঋণের ওপর চাপ পড়বে। বাধ্য হয়ে সুদের হার বাড়বে। এমনিতেই অনেক ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে চাচ্ছে। তারা সুদের হারের উচ্চমাত্রা ৯ শতাংশ তুলে দেওয়ার দাবি করছে। সুদের হার বাড়লে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। তখন করোনার ক্ষতি থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে বিকল্প উপায় বের করতে হবে। লকডাউন দিয়ে শিল্পকারখানা বন্ধ রাখলে নতুন বিনিয়োগ তো হবেই না, যেগুলো আছে সেগুলোও ধরে রাখা যাবে না। ব্যবসা-বাণিজ্যে একটির সঙ্গে আরেকটির সংযোগ রয়েছে। ফলে রপ্তানি বা খাদ্য শিল্প খুলে দিলে আমদানি ব্যাহত হবে। কিছুদিন পর কাঁচামাল হিসাবে পণ্য আমদানি হবে না। এ কারণে সব শিল্পই খুলে দিতে হবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট নিরসনে কত পদক্ষেপই না নেওয়া হলো। কিন্তু গার্মেন্টসহ বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখা হলো। ফলে কনটেইনার খালাস করতে কেউ যেতে পারল না। আবার জট লেগে গেল। এ রকম সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে।

মুদ্রানীতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের মুদ্রার সুদের হার বাড়তে শুরু করেছে। ইউরোর সুদের হার আগে নেতিবাচক ছিল। এখন তা ইতিবাচক হয়ে উঠেছে। এতে টাকার বিনিময় হারেও চাপ বাড়তে পারে। তখন প্রত্যাশার চেয়ে সুদের হার বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।

উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে অনেক দেশ ক্রমবর্ধমান পণ্য ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির মুখোমুখি হচ্ছে। বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে। যা স্বল্প আয়ের লোকদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

করোনার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মানুষের চলাচল কমেছে। এতে তাদের কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে। কমেছে আয়। ক্রয়ক্ষমতা কমায় উৎপাদিত পণ্যও কিনেছে কম। সব মিলে এ চক্রে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতেই সম্প্রসারণশীল ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। যা চাহিদা অনুযায়ী টাকার প্রবাহ বাড়াবে।

করোনার কারণে ১৫ মাস ধরে ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে। আয় যা হচ্ছে তার সিংহভাগই কাগুজে। ফলে ব্যাংকগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সার্বিক অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

এছাড়া বিভিন্ন উপকরণ কেনাকাটা করতে গিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ বহু আর্থিক অপরাধের মুখোমুখি হয়েছে। কেনাকাটায় দুর্নীতি, জালিয়াতি কার্যক্রমে প্রণোদনাগুলো সঠিকভাবে কাজ করেনি। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক করোনার জরুরি কেনাকাটা দ্রুত সম্পন্ন করতে লেনদেনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ তদারকি করার পরামর্শ দিয়েছে।

এতে বলা হয়, পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ চেইনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক দৃষ্টি রাখবে। বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি কমে ১৩ শতাংশ হতে পারে। আমদানিতে গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে তা কমে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে তা ২০ শতাংশ হতে পারে। একই সঙ্গে বাড়বে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ কমে যাবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৫ হাজার ২০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রার সম্পদ।

209 ভিউ

Posted ৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩১ জুলাই ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com