নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া(৭ জুন) :: বিশ্বমহামারী কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ঘাট পারাপারের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলা প্রশাসন। ঘাট পার হতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। অনুমতি ছাড়া দ্বীপ ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে পারবেন না এর অধিবাসীরা। আবার বাহির থেকেও কেউ প্রশাসনের পূর্ব অনুমতি ছাড়া দ্বীপে প্রবেশ করতে পারবে না।
কিছু কিছু অসাধু লোক কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিক্ষিপ্তভাবে/অবৈধভাবে/অসদুপায়ে অনেক মানুষকে ঘাট পারাপার করাচ্ছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়ার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মীর।
এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা Ziaul Mir (Uno Kutubdia) নামক ফেইসবুকেও প্রচার করেছেন। নির্দেশনায় তিনি চিকিৎসা বা জরুরি প্রয়োজনে কুতুবদিয়ার ঘাট সমূহ পারাপারের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জিয়াউল হক মীর বলেন, উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কেবলমাত্র চিকিৎসা বা জরুরি প্রয়োজনে কুতুবদিয়ার বাইরে যাওয়া যাবে বা কুতুবদিয়ায় প্রবেশ করা যাবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে কুতুবদিয়া হাসপাতালের রেফারেন্স উপজেলা প্রশাসনের নিকট দাখিল করতে হবে।
কোন ব্যক্তি কেবলমাত্র চিকিৎসা বা জরুরি প্রয়োজনে কুতুবদিয়ার বাইরে যেতে হলে বা কুতুবদিয়ায় প্রবেশ করতে হলে সেক্ষেত্রে যাত্রার অন্তত আগের দিন ঐ ব্যক্তির নাম, আগমন/বহির্গমনের তারিখ, মোবাইল নম্বর, আগমন /বহির্গমনের কারণ, ফেরত আসবেন /যাবেন কিনা তা উল্লেখ করে এসএমএসের মাধ্যমে (কেউ এসএমএস লিখতে না পারলে সেক্ষেত্রে কল করে) ০১৯১৭৮৯০৩৬৯ নম্বরে তথ্য দিয়ে জানাতে হবে । সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে উপরোক্ত কারণে ঘাট পারাপারের অনুমতির পাশটি উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত করে রাখবে।
যারা কুতুবদিয়ার বাইরে যাবেন তাদের পাশটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে নিয়ে যেতে হবে। আর যারা কুতুবদিয়ায় প্রবেশ করবেন তাদের পাশগুলো ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ এবং ঘাটের ইজারাদার কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কেবল যাদের নামে পাশ ইস্যু হবে শুধু তারাই ঘাট পারাপার করতে পারবেন। ফেরত আসা/ যাওয়ার অনুমতি থাকলে পাশটি শুধুমাত্র পরবর্তী ১ বার আসা/যাওয়ার জন্য প্রযোজ্য হবে এবং তারপর ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও ইজারাদারের প্রতিনিধি পাশটি ছিড়ে ফেলবেন।
তবে ঘাট পারাপারের ক্ষেত্রে যেকোনো অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ০১৮৭২৬১৫১৪০ নম্বরে জানানো যাবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এই উদ্যোগের প্রসংশা করেছেন দ্বীপের সচেতন মহল। তবে সচেতন মহল জানিয়েছেন পারাপারের ক্ষেত্রে ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্পষ্ট করে দিলে ঘাটে হয়রানি ও জুলুমের শিকার হত না সাধারণ মানুষ।
তাঁরা জানান, ইজারাদারের নিয়োজিত লোকজন জরুরি মুহূর্তে একটি লাশ থেকেও এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া আদায় করে থাকে। তাদের দাবি পূরণ না হলে লাশ নিয়ে ঘাটে বসে থাকতে হয় স্বজনদের। যা অমানবিক। ইজারা শর্ত অনুযায়ী ঘন্টা পরপর পারাপার ঘাট নিয়মিত হওয়ার কথা থাকলেও লকডাউন চলাকালীন তা রিজার্ভ বলে যাত্রীদের নিকট হতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়। অন্যথায় পার হওয়া যায় না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। যা এক প্রকার জিম্মি করে নির্যাতনের সামিল বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অভিযোগ গুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা।
Posted ১০:০১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৭ জুন ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta